ইম্পেরিয়ালের গবেষকদের মতে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করাটাই এখন সবচেয়ে জরুরি। এসব পদক্ষেপ সময়মতো যথাযথভাবে কার্যকর করা গেলে বিশ্বজুড়ে তিন কোটি ৮৭ লাখ মানুষকে বাঁচানো সম্ভব। শতকরার হিসাবটা আরো আশাব্যঞ্জক। গবেষকদের হিসাবে সময়মতো কঠোর পদক্ষেপ ৯৫ শতাংশ মৃত্যু রোধ করতে পারে। আর যদি কিছুই না করা হয়, তবে এ বছরের মধ্যেই মারা যাবে প্রায় চার কোটি মানুষ।
চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভাইরাসে এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। এ মহামারি মোকাবেলায় পদক্ষেপ গ্রহণের সময় ও ধরন অনুসারে বিশ্বব্যাপী পরিস্থিতি কেমন দাঁড়াতে পারে, সে চিত্র তুলে ধরেছেন ইম্পেরিয়াল কলেজের গবেষকরা।
গবেষকদের হিসাবে, মহামারি রোধে দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হলে কয়েক কোটি প্রাণ রক্ষা পাবে, সেটা যেমন সত্যি, তেমনই সত্যি বিপুলসংখ্যক প্রাণহানি আশঙ্কা। তাঁরা জানান, সরকারগুলো আন্তরিক হয়ে দ্রুত তৎপর হলেও এ বছরের মধ্যে সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবে ৪৭ কোটি মানুষ এবং মারা যাবে ১৮ লাখ ৬০ হাজার। আর পদক্ষেপ গ্রহণে শিথিলতা দেখালে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দাঁড়াবে যথাক্রমে ২৪০ কোটি ও এক কোটি চার লাখ ৫০ হাজারে।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে কঠোর হলে কতটা কাজ হবে, সে সম্পর্কে গবেষকরা জানান, সাধারণ জনগণের সামাজিক যোগাযোগের হার ৪০ শতাংশ এবং ঝুঁকিপূর্ণ ও বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠীর সামাজিক যোগাযোগের হার ৬০ শতাংশ কমানো গেলে কভিড ১৯ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা দুই কোটির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব।
আশা আর আশঙ্কায় ভরা এসব তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি গবেষকরা এটা স্বীকার করেছেন, বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারির যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। পরিস্থিতি মোকাবেলার সক্ষমতায় ঘাটতির কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলোর পরিস্থিতি অনেক বেশি ভয়াবহ হবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন তাঁরা।
কভিড ১৯ রোগীর ফুসফুসের ভিডিও : আশা, নিরাশা আর অনিশ্চয়তার মধ্যে মানুষকে সচেতন করে তুলতে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি হসপিটালের চিকিৎসকরা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির ফুসফুসের অবস্থা কেমন দাঁড়িয়েছে, সেটাই তুলে ধরা হয়েছে ওই ভিডিওতে। কর্তৃপক্ষ জানায়, ৫৯ বছর বয়সী ওই পুরুষ রোগীর উচ্চ রক্তচাপ ছাড়া অন্য কোনো বড় সমস্যা নেই। এ রোগীর ফুসফুসের বর্তমানে যে অবস্থা, তাতে তাঁর সুস্থ হতে অনেক সময় লাগার কথা। তাঁর মতো একই অবস্থায় পৌঁছালে ২ থেকে ৪ শতাংশ কভিড ১৯ রোগীর মৃত্যু হওয়ার কথা। সূত্র : এএফপি, বিবিসি, সিএনএন।