রোববার (৪ জুলাই) আবহাওয়া অধিদফতর এসব তথ্য জানিয়েছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, স্বাভাবিকভাবে দেশে জুন মাসে বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা ৪৪০ মিলিমিটার। কিন্তু এ বছর রেকর্ড ৫১৭ দশমিক ৯ মিলিমিটার। স্বাভাবিকের চেয়ে এই হার প্রায় ১৮ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে এ মাসে গড়ে ১৮ দিন বৃষ্টির দেখা পাওয়ার কথা। কিন্তু ৩০ দিনই বৃষ্টি হয়েছে। এই অতি বৃষ্টির কারণে নদ-নদীগুলো আগে থেকেই টইটম্বুর হয়ে আছে। ফলে গত চার দিন ধরে টানা বৃষ্টি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে বন্যার ঝুঁকিতে ফেলেছে। শুধু তাই নয়, ইতোমধ্যে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে একদফা স্বল্প স্থায়ী বন্যা হয়ে গেছে। এতে সংশ্লিষ্ট এলাকার নিম্নাঞ্চল চলে গেছে পানির নিচে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশের উত্তরাঞ্চলে দু'তিন দিনের মধ্যে বন্যা শুরু হতে পারে। সাগর পানে পানি নেমে যাওয়ার গতি বেড়ে যাওয়ায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অনেক স্থানে বেড়েছে নদীভাঙন।
এখন যে বৃষ্টি হচ্ছে, তার প্রকোপ ও তীব্রতা আগামী তিন দিনে আরও বেড়ে যেতে পারে। অতি বৃষ্টি চলছে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন রাজ্যে। সেই পানিও আসছে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং মেঘনা অববাহিকা হয়ে বাংলাদেশে।
এ ব্যাপারে বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হবে-এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তা যদি অতিবৃষ্টি হয় তখন বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। নদীতে যে বন্যা তার ৯৩ শতাংশ পানির উত্স উজানের দেশগুলো। ভারত, নেপাল, চীন ও ভুটান থেকে আসে এই পানি। এই পানি বাংলাদেশে বন্যার প্রধান কারণ। দেশের ভেতরের বৃষ্টি নদীর বন্যার ওপর তেমন একটা প্রভাব ফেলে না। এটা নগরবন্যার কারণ হতে পারে। তিনি বলেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি সময়ের সাথে পরিবর্তন হতে পারে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন আবহাওয়া সংস্থার গত কয়েক দিনের কম্পিউটার মডেল প্রায় দেড় হাজার মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছিল। এখন একটু কম দেখাচ্ছে। ৫ থেকে ৮শ' মিলিমিটার বৃষ্টি আছে। কিন্তু মেৌসুম সক্রিয় থাকায় বৃষ্টির পরিমাণ যে বাড়বে না তা এখনই বলা যাচ্ছে না। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ৭-৮ জুলাই উত্তরাঞ্চলের নদীগুলো বিপদসীমা পার করতে পারে। স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা হতে পারে।