রবি’র আর্থিক দুর্বলতা খতিয়ে দেখবে বিএসইসি

রবি’র আর্থিক দুর্বলতা খতিয়ে দেখবে বিএসইসি
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ খাতের বহুজাতিক কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেডের আর্থিক দুর্বলতার কারণ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এজন্য তিন সদস্যের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। রবি আজিয়াটার আর্থিক দুর্বলতার বিষয়গুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধানে কমিটির পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হবে।

এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, রবি’র আর্থিক দুর্বলতার কারণগুলো আমরা জানতে চাই। কোম্পানিটির মুনাফা এত কম কেন, কোম্পানিটি ট্রান্সফার প্রাইসিং করছে কিনা, প্রশাসনিক খাতে বেশি ব্যয় করছে কিনা এগুলো আমরা খতিয়ে দেখব। রবি’র আর্থিক পারফরম্যান্সে উন্নতির জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে যদি কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হয় তাহলে সেটি করা হবে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে আমরা চাইছি কোম্পানিটির আর্থিক পারফরম্যান্স যাতে আরো ভালো হয়।

গঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এবং সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান।

তালিকাভুক্তির পরেই রবি’র আর্থিক দুর্বলতার বিষয়টি কমিশনের নজরে এসেছে। বিশেষ করে টেলিযোগাযোগ খাতের তালিকাভুক্ত আরেক কোম্পানি গ্রামীণফোনের সঙ্গে তুলনা করলে রবি বেশ পিছিয়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কমিশন রবি’র আর্থিক দুর্বলতার মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধানে কোম্পানিটিকে পরামর্শ দেবে।

দেশের পুঁজিবাজারে গত ২৪ ডিসেম্বর রবির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭৪১তম কমিশন সভায় রবিকে ১০ টাকা ইস্যুমূল্যে ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি সাধারণ শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দেয়া হয়। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহ করছে রবি। আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত তহবিল থেকে প্রতিষ্ঠানটি ৫১৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও বাকি ৮ কোটি ২ লাখ টাকা আইপিওর ব্যয় নির্বাহ খাতে খরচ করবে।

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা না করার সিদ্ধান্তের কারণে সমালোচনার মুখে পড়ে রবি। বিএসইসির পক্ষ থেকেও কোম্পানিটির কাছে এ ধরনের ঘোষণার কারণ জানতে চাওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে সমালোচনা এড়াতে চলতি ২০২১ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক ফলাফলের ভিত্তিতে ৩ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে রবি।

রবি আজিয়াটার অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি ২০২১ হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১২ পয়সা। সে হিসাবে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস আগের বছরের তুলনায় ৩ পয়সা কমেছে।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ১৫ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৬ পয়সা। সে হিসাবে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস আগের বছরের তুলনায় কমেছে ১ পয়সা। ৩০ জুন ২০২১ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৪৫ পয়সা।

চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪ পয়সা। চলতি বছরের ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৬৬ পয়সা।

৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৯০ পয়সা, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ১২ টাকা ৬৪ পয়সা।

রবি আজিয়াটা লিমিটেডের এনটিটি সার্ভিল্যান্স রেটিং ‘ডাবল এ’। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, আলোচ্য সময় পর্যন্ত ব্যাংকের কাছে প্রতিষ্ঠানটির দায়সহ হালনাগাদ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিআরএবি)।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত