বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ফোনালাপের বিষয়টি তুলে ধরে মোমেন বলেন, র্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনার দরজা খোলা আছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অনেকক্ষণ আলোচনা হয়েছে। তারা এমন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা দেশবাসী গ্রহণ করেনি। এ সিদ্ধান্ত আলোচনার মাধ্যমে না নেয়ায় এটি আমরা পছন্দ করিনি।
‘যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা খুবই দুঃখজনক।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সব সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। এ ইস্যুতে ঢাকা-ওয়াশিংটনের মধ্যে সস্পর্কের কোনো প্রভাব পড়বে না।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ৬ লাখ লোক মিসিং হয়। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশে ৬ হাজার লোক মিসিং হয়েছে। অন্যদিকে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে হাজার লোক মেরে ফেলে। যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল পলিসি হলো সন্ত্রাস দমন।
‘সন্ত্রাস দমনে র্যাব অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ইস্যু মাদক পাচার বন্ধে র্যাব সাহায্য করছে। র্যাব দুর্নীতিপরায়ণ নয়। টাকা-পয়সা দিয়ে র্যাবের অবস্থা পরিবর্তন করা যায় না। ফলে তারা বাংলাদেশের জনগণের আস্থা অর্জন করেছে।’
মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এত বড় সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সঙ্গে কথাবার্তা না বলে নেয়া ঠিক হয়নি। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ। আমাদের সঙ্গে অনেক ডায়ালগ আছে। সেখানে আমরা কথা বলব।’
এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ব্লিঙ্কেন মুঠোফোনে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে কথা বলেন। প্রায় ৩০ মিনিটের আলোচনায় আগামী বছর সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে দুই দেশের সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তারা কথা বলেন। এ সময় র্যাব এবং র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গটি তোলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে আলোচনার আশ্বাস দেন। এ সময় বাংলাদেশের কোনো বিষয়ে প্রশ্ন থাকলে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে ফোনে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনকে অনুরোধ করেছেন এ কে আব্দুল মোমেন।