সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এডিপি বাস্তবায়নের সর্বশেষ চিত্র প্রকাশ করেছে।
আইএমইডি সূত্রে জানা গেছে, গত বছর এই সময়ে মোট অর্থ খরচ হয়েছিল ৩৮ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছরের একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন ৫ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা বেড়েছে। এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৯ দশমিক ২৪ শতাংশ, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২০ দশমিক ১৫ ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়ন হার ছিল ২০ দশমিক ১১ শতাংশ। করোনা সংকটের কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নে ছন্দপতন ঘটে। ধীরে ধীরে করোনা সংকট কমে যাওয়ায় আবারও চাঙ্গা হচ্ছে এডিপি বাস্তবায়ন।
শুধু নভেম্বর মাসেই এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি বেড়েছে ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ১৩ হাজার ১৪২ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে বেড়েছিল ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা টাকার অঙ্কে ছিল ১১ হাজার কোটি টাকা।
এডিপি বাস্তবায়নে সব থেকে এগিয়ে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ। এই বিভাগে বাস্তবায়ন হার ৯১ শতাংশ। অন্যদিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ে বাস্তবায়ন হার ৪৫ শতাংশ। নির্বাচন কমিশনের এডিপি বাস্তবায়ন হার ৪৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ, যা টাকার অঙ্কে ৩৫৪ কোটি টাকা। এডিপি বাস্তবায়নে তুলনামূলকভাবে ভালো করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাস্তবায়ন হার ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ২২ দশমিক ২৬, রেলপথ মন্ত্রণালয় ২২ দশমিক ২৫, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৩ দশমিক ৯২, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ২৬ দশমিক ৪২ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে। অন্যদিকে এডিপি বাস্তবায়নে পিছিয়ে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বাস্তবায়ন হার শূন্য দশমিক ৮৯ শতাংশ। আইন ও বিচার বিভাগ ৩ দশমিক ১২, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২ দশমিক ১৪, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন ৭ দশমিক ৭৫, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ৫ দশমিক ৭২, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ৮ দশমিক শূন্য ৪, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) রয়েছে। যা ২০২০–২১ অর্থবছরের চেয়ে ২০ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা বেশি। চলতি এডিপিতে সরকার জোগান দিচ্ছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। আর উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে ৮৮ হাজার ২৪ কোটি টাকা।
এডিপিতে ১০টি বৃহৎ প্রকল্পে মোট ৫৪ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা পেয়েছে। এরপর মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬ হাজার ১৬২ কোটি টাকা, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচিতে (পিইডিপি–৪) ৫ হাজার ৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে মেট্রোরেল ৪ হাজার ৮০০ কোটি, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ ৩ হাজার ৮২৩ কোটি এবং পদ্মা সেতু ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা পেয়েছে। করোনার সংক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে স্বাস্থ্য খাতের বহুল আলোচিত দুটি প্রকল্পে ২ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা টিকাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনাকাটায় খরচ হচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ হাজার ৮৮৭ প্রকল্পের আওতায় এই অর্থ খরচ হচ্ছে।