ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের গবেষণা ও বিশ্লেষণ বিভাগ ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) ২০০৬ সাল থেকে বিভিন্ন দেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। প্রথমবার প্রকাশিত তালিকার পর এবারই বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। যদিও বিশ্বে গণতান্ত্রিক শাসন আরও কমেছে।
বাংলাদেশের অবস্থান
গত বছর ইআইইউ’র তৈরি গণতন্ত্রের সূচকে ১৬৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ছিল ৭৬তম। এ বছর তালিকায় ১৬৭ দেশের মধ্যে ৭৫তম বাংলাদেশ। এর আগের বছর অবশ্য একলাফে চার ধাপ এগিয়েছিল দেশটি।
গণতন্ত্রের সূচকে বেঞ্চমার্ক ১০ পয়েন্টের মধ্যে এ বছর বাংলাদেশের স্কোর ৫ দশমিক ৯৯। গত বছরও তাদের পয়েন্ট একই ছিল। অর্থাৎ এ বছর পয়েন্টের পরিবর্তন না হলেও তালিকায় একধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে গণতন্ত্রের বিচারে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। তালিকায় ভারতের অবস্থান ৪৬তম আর শ্রীলঙ্কা ৬৭তম। ভুটান রয়েছে ৮১তম অবস্থানে, নেপাল ১০২তম, পাকিস্তান ১০৪তম, মিয়ানমার ১৬৬তম।
গণতন্ত্র সূচকের তালিকায় ৯ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে। শীর্ষ দশে থাকা বাকি দেশগুলো হলো যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, আইসল্যান্ড, ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া ও সুইজারল্যান্ড।
আবারও ‘ক্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্রের’ দেশের তালিকায় স্থান হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। তালিকার সবচেয়ে নিচে রয়েছে আফগানিস্তান। সবচেয়ে কম গণতন্ত্র থাকা দেশগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে উত্তর কোরিয়া, লাওস, চীন, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, নেপাল ও হংকং।
যেসব মানদণ্ডে এই বিচার করা হয়
পাঁচটি মানদণ্ডে ১০ পয়েন্ট ধরে বিভিন্ন দেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি বিচার করে প্রতি বছর প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। এগুলো হলো- নির্বাচনী ব্যবস্থা ও বহুদলীয় অবস্থান, সরকারের সক্রিয়তা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং নাগরিক অধিকার।
প্রতিবেদনে দেশগুলোর গণতান্ত্রিক পরিস্থিতিকে চারটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। তা হলো- পূর্ণ গণতন্ত্র, ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র, মিশ্র শাসন (হাইব্রিড) ও স্বৈরশাসন।
সূচকে কোন দেশের গড় স্কোর ৮ এর বেশি হলেই পূর্ণ গণতন্ত্র রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। ৬ থেকে ৮ হলে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র, ৪ থেকে ৬ হলে মিশ্র শাসন আর ৪ এর নিচে হলে স্বৈরশাসন বলে ধরা হয়। বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থাকে ইআইইউ তৃতীয় শ্রেণির অর্থাৎ মিশ্র শাসনের অন্তর্ভুক্ত করেছে।