রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পরিস্কার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী পরশু (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে স্কুল-কলেজ (বিশ্ববিদ্যালয় সহ) খোলা হবে, ১ তারিখ (১ মার্চ) থেকে প্রাইমারি স্কুল খুলবে। এরপর থেকে আর বিধিনিষেধ দেওয়া হবে না। তবে সবাই যাতে অবশ্যই মাস্ক পরে, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
২২ ফেব্রুয়ারির পর আর বিধিনিষেধ দেওয়া হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, আর বিধিনিষেধ দেওয়া হবে না। এটা আর বাড়ছে না।
‘তবে যে কোনো অনুষ্ঠানে যাবে, যেখানে যাবে, সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। সবাইকে সেটা নিশ্চিত করার অনুরোধ করা হয়েছে।’
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্যের শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোভিডের বিষয়টা নিয়ে সবাইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সংক্রমণ পরিস্থিতি একটু কমফোর্টের দিকে যাচ্ছে বলে রিল্যাক্স যেন না হই। আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন। সব লেভেলের লোকদের এটা মানতে হবে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে এক কোটি ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রোগ্রাম নেওয়া হয়েছে। এটা প্রচারের জন্য বলা হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশ টিকা দিতে পারছে না। তবে আমাদের পর্যাপ্ত টিকা আছে। বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে, সবাই যাতে সহযোগিতা করি।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, কারো যদি এনআইডি নাও থাকে, একটা ছোট স্লিপে ঠিকানা নিয়েও যদি যান, তারা টিকা নিয়ে তারা তালিকায় তাদের ঠিকানা দিয়ে যাবেন। ইতোমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে আরও নতুন একটি ওয়েভ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ওটা কিন্তু ওমিক্রনের মতো অত সহজ হবে বলে ওনারা মনে করেন না। সেজন্য সবারই উচিত বিশেষভাবে পদক্ষেপ নিই।
‘আর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিন্তা করছে- কীভাবে ১২ বছরের নিচেও দ্রুত টিকা দেওয়া যায়। পৃথিবীর যে সব দেশে দেওয়া হচ্ছে, তাদের কাছে অভিজ্ঞতা ও অ্যানালাইসিসটা নিয়ে ওনারা যেন শুরু করতে পারেন। ক্লাস সিক্সে অনেক বাচ্চার অসুবিধা হচ্ছে। সিক্সে পড়লেও হয়তো ১২ বছর হয়নি। সেক্ষেত্রে একটু অসুবিধা হচ্ছে।’
নতুন ধরন ওমিক্রনসহ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ১০ জানুয়ারি সারাদেশে বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। যা ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়। তখন ১১টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিলো।
করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে ২১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সর্বশেষ গত ২৪ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অর্ধেক জনবল নিয়ে সরকারি-বেসরকারি অফিস পরিচালনার নির্দেশনা দিয়েছিল সরকার।
পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় বিধিনিষেধের মেয়াদ ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এখন করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। প্রতিদিনই কমছে সংক্রমণের হার। ফলে বিধিনিষেধ আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।