রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষাপটে রমজান মাসে এক কোটি হতদরিদ্র পরিবারকে টিসিবির মাধ্যমে সাশ্রয়ী দামে পেঁয়াজ, তেল, ডাল, চিনি, খেজুর ও ছোলা। ওই ছয়টি পণ্য দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ৫০ লাখ নয় এক কোটি মানুষকে সেই ব্যবস্থায় আনতে। আমরা সরকারিভাবে চেষ্টা করছি রমজানকে সামনে রেখে এক কোটি মানুষকে আমরা পেঁয়াজ, তেল, ডাল, চিনি এ ধরনের সামগ্রী দেবো সাশ্রয়ী মূল্যে দেবো। আগে যেভাবে টাকাটা দেওয়া হয়েছে সেই লিস্ট তো আছে। প্রতিটি ইউনিয়নে টিসিবির মাধ্যমে ওপেনিং করা হবে সেখান থেকে তারা কালেক্ট করে দেবে। যে চারটা পণ্য আমরা দেই সেটার সঙ্গে রমজান মাসে খেজুর ও ছোলা যোগ হবে।
মন্ত্রী বলেন, এটা সত্যি কথা যে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি, সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দিয়ে সেটা সাধারণ মানুষকে দেওয়া। আমরা চিন্তা করলাম রমজান মাস উপলক্ষে ৫০ লাখ মানুষকে দেওয়া যায় কিনা। সেটা ট্রাকের মাধ্যমে নয়, আগে যেভাবে আড়াই হাজার টাকা দিয়েছিল, দুস্থ লোক যারা তাদের কাছে পৌঁছে দেবো।
সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ভোজ্য তেলের দাম আমরা বাড়িয়েছি। কারণ ৯০ শতাংশ তেল আমরা ইমপোর্ট করি। আন্তর্জাতিক বাজারে সেই ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে। কন্টেইনার ভাড়া বেড়েছে এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যদি আমরা ঠিক না করে দিই তাহলে তো ব্যবসায়ীরা তেল আনবেই না।
এজন্য ট্যারিফ কমিশন আছে তারা বসে আন্তর্জাতিক বাজারের ১০ দিন ১৫ দিনের প্রাইজ ফিক্সআপ করে। সব দেখে একটি প্রাইজ ফিক্স করা হয় যেটা হওয়া উচিত। তেলের দাম আপনারা জানেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ১০ বছর আগে যেটা ছিল সেটা এখন ডাবল হয়েছে। এখন যদি আমরা বলি দাম বাড়াতে পারবেন না তাহলে তারা (ব্যবসায়ীরা) আমদানি করবেন না। আমদানি না করলে তো আরো বড় ধরনের ক্রাইসিস হয়ে যাবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম না কমলে ব্যবসায়ীদের চাপ দিয়ে লাভ নেই উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রি বলেন, ব্যবসায়ীদের চাপ দিয়ে তো লাভ হবে না। এক বিষয় হতে পারে যে আমরা যে দাম নির্ধারণ করে দিলাম তার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করলে ভোক্তা অধিকারসহ সরকারের বিভিন্ন হ্যান্ডস দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে টিপু মুন্সি বলেন, এর উল্টোটা যদি বলি, পেঁয়াজের দাম ২৫ টাকা হয়ে গেল কেনো? সেখানেও কিন্তু কৃষকরা বলছেন, পেঁয়াজ কিন্তু আমরা রাস্তায় ফেলে দেবো। এটা কাঁচামাল তো দুই দিন যদি ট্রান্সপোর্ট বন্ধ থাকে এটার দাম কিন্তু বেড়ে যাবে।
টিপু মুনশি বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় আমাদের একটি হিসাব দিয়েছে জায়গা ভেদে ১৮ থেকে ২০ টাকা খরচ প্রতি কেজিতে কৃষকদের। এটাকে অন্তত ২৫ টাকায় বিক্রি করতে হবে। ২৫ টাকা যদি কুষ্টিয়া, রাজবাড়ীতে কৃষকরা বিক্রি করে ঢাকায় এটা ৪০ টাকা ৪৫ টাকায় বিক্রি করতে হবে। এখন ঢাকায় যখন ২৫ টাকা হয়েছিল কৃষিমন্ত্রী আমাকে বললেন, আমরা সব ইমপোর্ট বন্ধ করে দেবো, কৃষকরা তো কান্নাকাটি করছে। এটা হচ্ছে সমস্যা। যদি দাম কমে যায় কৃষকরা বলেন কী করবো? আবার যখন বেড়ে যায় ভোক্তারা বলেন, দাম বেড়ে গেছে।