বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল আওয়ালের হাতে ফিক্স সার্টিফিকেশন তুলে দেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহমেদ।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়:
১.কোয়ান্টের অ্যাপসটি দিয়ে ব্যবহারকারীরা মোবাইল,কম্পিউটার এবং ওয়েব ব্রাউজার দিয়ে সরাসরি শেয়ার লেনদেন করতে পারবে।
২.ডিলার টার্মিনালের মাধ্যমে ডিলার বা ট্রেডাররা তাদের কাস্টমারদের ট্রেড ব্যবস্থাপনা করতে পারবে।
৩.ঢাকা এবং চট্টগ্রাম উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ার লেনদেন করা যাবে একই অ্যাপ থেকে।
৪. উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের প্রতিটি শেয়ারের মার্কেট ডেপ্থ বা বায়ার এবং সেলারের পার্থক্য একই সাথে দেখা যাবে।
৬. সফটওয়্যারটি মাল্টি অ্যাসেট ক্লাস বা মাল্টিপল বোর্ড সাপোর্ট করে।
৭. ওএমএস টি প্রায়োরিটি ট্রেডিং সাপোর্ট দিয়ে থাকে। যেমন কেউ একটি ক্রয় আদেশ দিলে সফটওয়্যারটি নিজ থেকে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের মধ্যে কম প্রাইস বা কম মূল্যে যেই স্টক এক্সচেঞ্জে পাবে সেখান থেকে ক্রয়াদেশ টি বাস্তবায়ন বা এক্সিকিউশন করবে।
৮. ও এম এস বা সফটওয়্যারটিতে ব্রোকারেজ ব্যাক অফিস বিল্ট ইন থাকায় খুব সহজেই ব্রোকারেজ হাউজ গুলো তাদের অপারেশনের জন্য এডমিন টার্মিনাল, কাস্টমার একাউন্ট , কাস্টমার লিমিট এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা করতে পারবে ।
8.ও এম এস টি তে এপিআই বা অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম ইন্টারফেস সুবিধা থাকায় যেকোনো একাউন্টিং সিস্টেম, ব্যাংকিং গেটওয়ে এবং ডিপোজিটরি সিস্টেম বা পদ্ধতি যোগ করা যাবে খুব সহজেই।
৯. টেকনিক্যাল চার্টিং সুবিধা থাকবে, যা নিজেদের মতো করে ব্যবহারকারীরা তাদের ট্রেডিং সিস্টেম তৈরি করতে পারবে। এবং সকল ধরনের টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর স্ক্রিনার সুবিধা উপভোগ করতে পারবে।
১০. ওএমএস টিতে শক্তিশালী ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ মডিউল বিল্ট ইন দেওয়া আছে এবং ব্রোকারেজ হাউজগুলো তাদের নিজস্ব রিসার্চ মডিউলও ওএমএসের মধ্যে ইন্টিগ্রেড করতে পারবে।
১১. এক ক্লিকেই কাস্টমার তার মাল্টি একাউন্ট এক্সেস করতে পারবে।
১২. মাল্টি ব্রোকার এবং মাল্টি ইনস্টিটিউশনাল ট্রেডিং ফ্যাসিলিটি ওএমএস টিতে আছে।
১৪ কাস্টমার চাইলে তার নিজস্ব ট্রেডিং ইউনিভার্স তৈরি করতে পারবে। যেমন যদি কোন কাস্টমার মনে করে যে সে শরিয়া স্টকের বাইরে অন্য কোন শেয়ার কেনাবেচা করবে না, তাহলে সে সেভাবে তার নিজস্ব ইউনিভার্স তৈরি করতে পারবে।
১৪.ওয়াইড রেঞ্জ পোর্টফোলিও এনালাইসিস করতে পারবে। যেখানে ব্যবহারকারী তার পোর্টফোলিও শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কি পরিমাণ লাভ এবং লস করেছে সেটি সে দিন মাস এবং বছর ভিত্তি আলাদাভাবে দেখতে পাবে। গ্রাহক তার প্রফিটাবিলিটি, এভারেজ উইন, এভারেজ লস, টোটাল কমিশন, বেস্ট ট্রেড, উরস্ট ট্রেড, এভারেজ ট্রেড ল্যান্থ, প্রফিট ফ্যাক্টর, স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন, সাফ্ রেশিও ও প্রফিটাবিলিটি ইত্যাদি এনালাইসিস করা যাবে।
১৫. ব্যবহারকারীরা তাদের ক্রয়-বিক্রয় আদেশ বসানোর পাশাপাশি স্টপ লস এবং টেক প্রফিট বসাতে পারবে।
১৬. স্মার্ট অর্ডার সিস্টেম ব্যবহার করা যাবে।
১৭. ফান্ড ম্যানেজার বা মাল্টিপল অ্যাকাউন্ট ম্যানেজাররা ট্রেড কপিয়ার সিস্টেম ফেসিলিটি উপভোগ করতে পারবে।
১৮. টেকনিক্যাল চার্ট থেকেই ওয়ান ক্লিক ট্রেডিং ফ্যাসিলিটি উপভোগ করা যাবে।
১৯. কিউ ট্রেডার ওএমএস এর পাশাপাশি কিউ ওয়েব ফেসিলিটি থাকায় কাস্টমাররা ব্রোকারের ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি হাউসে না এসে ডিপোজিট, টাকা উত্তোলন, আইপিও অর্ডার, কাস্টমারদের যেকোনো ধরনের রিপোর্ট, লেজার ব্যালেন্স, ট্রেডিং লেজার এবং রিসার্চ মডিউলার পেয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসইসির কমিশনার বলেন, বর্তমান সরকার দেশের সব প্রান্তে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে চায়। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই পুঁজিবাজারে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার আরও বাড়াতে কাজ করছে কমিশন।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে আরও বেশি অবদান রাখতে চাই। ব্যাংকিং লেনদেনের সময়ের উপর বাজারের লেনদেনের সময় নির্ভর করে। সেক্ষেত্রে আমাদেরকে ব্যাংকিং কার্যক্রম শেষ হবার আরো আগে লেনদেন শেষ করতে হয়। আমরা পুঁজিবাজারে সপ্তাহে সাতদিন ২৪ ঘন্টাই লেনদেন করতে চাই। সেই জন্য পুঁজিবাজারে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর বিকল্প নেই।
এসময় ইউনাইটেড ফিনান্সিয়াল ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল আওয়াল বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশকে তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় নুতন কমিশনও পুঁজিবাজারকে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারই একটি বড় অর্জন দেশের পুঁজিবাজারে নিজস্ব ওএমএস চালু করা।
তিনি বলেন,এর আগে আরও দুটি প্রতিষ্ঠান ওএমএস চালু করেছে। মেড ইন বাংলাদেশে ব্র্যান্ড হিসেবে ইউএফটিসিএল ও কোয়ান্ট ফিনটেক লিমিটেডের (Quant Fintech Limited) যৌথভাবে ওএমএস সেবা চালু করতে যাচ্ছে। দীর্ঘ সময় কাজ করে বিশ্বমানের ওএমএস সার্ভিস চালু করতে চাচ্ছি আমরা। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ১ লা এপ্রিল থেকে আমাদের গ্রাহকরা বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে এই সেবা নিতে পারবে।
বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের উপর বিশ্বাস রাখার জন্য বিএসইসির চেয়ারম্যান,কমিশনার,ডিএসইর চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান আব্দুল আওয়াল। এই কাজটি সুন্দরভাবে করার জন্য বিএসইসি ও ডিএসইর কর্মকর্তারা যেই সহযোগিতা করেছে সেই জন্য তাদের কাছে কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করছেন তিনি।
উল্লেখ, ইতোমধ্যে দেশের শীর্ষ দুই ব্রোকার লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ ও সিটি ব্রোকারেজ তাদের গ্রাহকদের জন্য এই সেবা চালু করেছে।