ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দুনিয়ার প্রায় সব দেশ মস্কোর ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কিন্তু শুরু থেকেই রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলাকে ‘আগ্রাসন’ বলতে নারাজ চীন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবেও ভোটদানে বিরত থেকেছে বেইজিং। কিন্তু এবার রাশিয়াকে যন্ত্রাংশ সরবরাহ করতে মানা করে দিল সি চিন পিংয়ের দেশ। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পরই রাশিয়াকে যন্ত্রাংশ সরবরাহের পুরোনো সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটে চীন। বেলারুশের গণমাধ্যম নেক্সটা সূত্রে এ খবর পাওয়া গেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও চীনের সঙ্গে বিমানের যন্ত্রাংশ সরবরাহের চুক্তি এত দিন অটুট ছিল রাশিয়ার।
কিন্তু সোমবার চীনের প্রতিনিধি ইয়াং জিয়েচির সঙ্গে সাত ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠকে বসে ওয়াশিংটন। জানা গেছে, সেখানেই যুক্তরাষ্ট্র চীনকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, মস্কোর সঙ্গে বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠতা ভালো চোখে দেখছে না ওয়াশিংটন। এ পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে সহায়তা করলে এর পরিণতি চীনের জন্য ভালো হবে না।
চীন যে বিমানের যন্ত্রাংশ সরবরাহের চুক্তি বাতিল করেছে, তা জানিয়েছে রাশিয়াও। রাশিয়ার বিমান পরিবহন সংস্থা ‘রোসাভিয়াৎসিয়া’র মুখপাত্র ভ্যালেরি কুদিনভ বলেছেন, ‘যদ্দুর জানতে পেরেছি, চীনের সঙ্গে বিমানের যন্ত্রাংশ সরবরাহ করার চুক্তি ছিল কিন্তু চীন যন্ত্রাংশ সরবরাহে আপত্তির কথা জানিয়েছে। আমরা বিকল্প হিসেবে ভারত বা তুরস্কের কথা ভাবছি। তবে এখনো কিছু চূড়ান্ত বলার সময় হয়নি।’
বিমান পরিবহনের জন্য রাশিয়া মূলত বোয়িং ও এয়ারবাসের বিমান ব্যবহার করে। কিন্তু গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর থেকে বোয়িং ও এয়ারবাস রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। এর ফলে বিমানের যন্ত্রাংশ নিয়ে সমস্যায় পড়ছে পুতিনের দেশ। এ পরিস্থিতিতে চীনের সঙ্গে যন্ত্রাংশ সরবরাহের চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের চাপে আপাতত স্থগিত হয়ে গেল।
চীনের এ সিদ্ধান্তের কারণে এবার ভারত ও তুরস্কের মতো দেশের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে এখন রাশিয়ার কাছে যন্ত্রাংশ বিক্রি করলে তারাও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে।