রোববার (২৭ মার্চ) প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
ভিডিও কলের মাধ্যমে এক দল রুশ সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার হামলার ফলে ইউক্রেনের রুশ-ভাষী শহরগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতি চেচনিয়ায় রাশিয়ার যুদ্ধের চেয়েও বেশি।
তিনি বলেন, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং নিরপেক্ষতা, আমাদের রাষ্ট্রের অ-পরমাণু অবস্থা। আমরা এটার জন্য আলোচনায় যেতে প্রস্তুত। এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ান ভাষার ব্যবহার নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বৈঠকের সময় আলোচনা করা হয়েছে। তবে ইউক্রেন অন্যান্য রাশিয়ান দাবি, যেমন ইউক্রেনের নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ২০০৮ সাল থেকে আবেদন করে ইউক্রেন। মূলত, এ নিয়েই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তবে সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো। কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। ঠিক তার দুদিন পর ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে।
এ দিকে চলমান এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়েছেন প্রায় ৩৯ লাখ মানুষ। যুদ্ধে ইউক্রেনের ১৩শ’ সেনা এবং রাশিয়ার ১৬ হাজার ৪০০ সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া বলছে, যুদ্ধে তাদের ১ হাজার ৩৫১ সেনা নিহত এবং ইউক্রেনের আড়াই হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ অভিযানে ইউক্রেনের এক হাজার ৮০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স