তিন বছর বয়সি মিরুর মা-বাবাও আছেন তাদের ভেতর। মারাত্মক মস্তিষ্কের টিউমারের সঙ্গে বসবাস তার। বেঁচে থাকার জন্য দরকার একটি ‘অ্যান্টি-কনভালসেন্ট’ ওষুধের। সেটি সময়মতো না খেলে ঘনঘন মৃগী হয় তার। ‘হাসপাতালে এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না এই ওষুধ। আশপাশের ফার্মেসিগুলোতেও শেষ হয়ে গেছে’, বললেন হাতাশাগ্রস্ত এই বাবা।
এখন টাকা থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে না এই ওষুধ। অনেকটা একি অবস্থা ওয়াসান্তা সেনেভিরান্তের। সাত বছর বয়সি মেয়ের জন্য ‘ট্রাইপসেস’ ওষুধটি হন্য হয়ে খুঁজচ্ছেন। ‘কেমোথেরাপির ওষুধ এটি। হাসপাতাল, ফার্মেসি কোথাও নেই। কোনো সরকারি আমদানিকারক বা হাসপাতাল। কারোর কাছেই নেই’, বললেন এই হতভাগা বাবা। ‘কী করব আমি? আমার বাচ্ছা-তো বেশিদিন বাঁচবে না এই ওষুধ ছাড়া।’
অপরদিকে সংকটের এই বিরূপ প্রভাব পড়েছে হাসপাতালগুলোয়। ডাক্তাররা এখন চিকিৎসার সরঞ্জাম ফেলে না দিয়ে তা ধুয়ে, জীবাণুম–ক্তকরণ করে আবার ব্যবহার করছে অন্য রোগীদের ওপর। বিদ্যুতের অনুপস্থিতিতে মোবাইলের লাইট আর চার্জার ব্যবহার করে করছেন অস্ত্রোপচার। ‘আমি জানি এভাবে পরের রোগীর জীবন ঝুঁকি বাড়াচ্ছি। আমি একই সঙ্গে হতাশ এবং নিরূপায়’, বললেন এক ডাক্তার। সরঞ্জাম জীবাণুমুক্তকরণ করতেই ব্যয় হয়ে যায় অনেক সময়। আমাদের শেখানো সবকিছুর বিরুদ্ধে যায় এসব।
‘এটা একটি সংকট, আমরা বলতে পারছি না অবস্থা আর কত খারাপ হতে পারে’, বললেন রাষ্ট্রীয় ফার্মাসিউটিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সচিব আথুলা অমরসেন। কিন্তু আমরা জানি আমরা আরও বড় সংকটের দ্বারপ্রান্তে। এখন পর্যন্ত ওষুধ সল্পতার কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়নি শ্রীলংকান গণমাধ্যম থেকে। শুধু তাই নয়, অবেদনাশকও নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে। থেমে আছে জরুরি অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে বিভিন্ন গবেষণা। ‘আমাদের এখন কে বাঁচবে সেই হিসাব করতে হচ্ছে’, বললেন একজন সরকারি ডাক্তার।