বৃহস্পতিবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ইউক্রেনের সরকার বলেছে, বেসামরিক লোকজনকে বহনকারী ৪টি বাস অবরুদ্ধ এবং ধ্বংস হয়ে যাওয়া বন্দরনগরী মারিউপোল ছেড়েছে। তবে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা এখনও শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক বলেছেন, গতকাল বেসামরিক লোকজনকে বহনকারী চারটি বাস মানবিক করিডর ব্যবহার করে শহর ত্যাগ করেছে। বৃহস্পতিবারও নারী, শিশু এবং বয়স্কদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেনের এই উপপ্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মারিউপোলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। তবে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে। প্রায় দুই মাসের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের পর মারিউপোলের লড়াই এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। শহরটিতে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক নাগরিক আটকা পড়েছেন এবং অনেকে মারা গেছেন।
মারিউপোলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ফলে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা পূর্বের ডনবাস অঞ্চল হয়ে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে রাশিয়ার করিডর স্থাপন সহজ হবে। এর ফলে নিজেদের বেশিরভাগ উপকূলীয় এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারাবে ইউক্রেন।
বুধবার ইউক্রেনের জ্যেষ্ঠ আলোচক ও প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সহযোগী মিখাইলো পোডোলিয়াক মারিউপোল শহরের বাসিন্দাদের রক্ষায় বিশেষ পর্বের আলোচনা শুরু করতে রাশিয়ার কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন।
এর আগে, চলমান যুদ্ধের মাঝে দু’দিন আগে ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের আত্মসমর্পণের আল্টিমেটাম দিয়েছিল মস্কো। আত্মসমর্পণ করা যোদ্ধাদের জীবন রক্ষার প্রতিশ্রুতিও দেয় রাশিয়া। সেই আহ্বানে সাড়া না মেলায় বুধবার ফের আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় মারিউপোলে অবস্থানরত সেনা ও বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেয় ইউক্রেন।
এরপরই ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের অবশিষ্ট ঘাঁটি আজভস্টাল ইস্পাত কারখানা দখলের ঘোষণা দেন রাশিয়ার চেচনিয়া প্রজাতন্ত্রের প্রধান ও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ সহযোগী রমজান কাদিরভ। তিনি বলেছেন, ‘দুপুরের খাবারের আগে বা দুপুরের খাবারের পরে, আজভস্টাল সম্পূর্ণরূপে রাশিয়ান ফেডারেশনের বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।’