এক টেলিভিশন বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদ বলেন, জুডিশিয়ারি বিভাগকে শুদ্ধ করার জন্য বার বার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, শুধু তাই নয় সতর্কও করা হয়েছে। তার এমন ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার পর সরকারি গেজেটের মাধ্যমে বরখাস্তের ঘোষণা দিয়ে একটি ডিক্রি জারি করা হয়।
বরখাস্তকৃতদের মধ্যে রয়েছেন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সাবেক প্রধান ইউসুফ বাউজাকার। এই কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট কায়েস গত ফেব্রুয়ারিতে ভেঙে দিয়েছিলেন।
তিউনিসিয়ায় ২০১১ সালের বিপ্লবের পর থেকে কাউন্সিলটি বিচারিক স্বাধীনতার গ্যারান্টর হিসাবে কাজ করছিল এবং এই পদক্ষেপের ফলে সাইদ বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
গত জুলাইয়ে,করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকারের অব্যবস্থাপনার জেরে সহিংস বিক্ষোভের পর তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদ দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন। তবে দেশটির বিরোধীরা প্রেসিডেন্ট কায়েসের নেওয়া পদক্ষেপকে ‘অভ্যুত্থান’ হিসেবে অভিহিত করেন।
তিউনিসিয়াকে সংকট থেকে বাঁচাতে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করে তিনি তখন থেকেই ডিক্রি জারি করে দেশ শাসন করছেন। তার এমন পদক্ষেপের কারণে অর্থনৈতিক স্থবিরতা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং দুর্নীতির কারণে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে দেশটিতে। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্বের কারণে জনগণের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ।
স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণও প্রেসিডেন্টের হাতে বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও তিনি বলেছেন যে এই মাসে একটি নতুন সংবিধান প্রবর্তন করা হবে যার মাধ্যমে জুলাই মাসে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।
তবে, তিউনিসিয়ার প্রায় সব রাজনৈতিক দল শক্তিশালী ইউজিটিটি শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে তার এ পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে। ইউজিটিটি এই সপ্তাহে বলেছে যে সরকারি খাতের কর্মীরা ১৬ জুন ধর্মঘটে যাবে। যা এখন পর্যন্ত সাইদের ক্ষমতা দখলের জন্য সবচেয়ে বড় সরাসরি চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
১০ বছর আগে তিউনিসিয়ায় গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন দাবিতে বিপ্লব সংঘটিত হয়। তিউনিসিয়ার সেই বিপ্লব আরব বিশ্বের দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ে, যা আরব বসন্ত নামেও পরিচিত। বিপ্লবের এক দশক পরও তিউনিসিয়ার অর্থনৈতিক সংকট কাটেনি।