পৃথিবীতে করোনা মহামারীর ঘ্রাসে যত মানুষ আক্রান্ত হয়েছে তম্মধ্যে ওয়ান থার্ডের কম মানুষ আমরা হারিয়েছি। অসাবধানতা ও আর্তচিৎকারের কারণে। এখন বিশ্বে অনেক দেশ করোনা জয় করছে । বাংলাদেশও এ জয় থেকে পিছিয়ে পড়েনি।
ইতালী, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য স্পেনসহ কয়েকটি রাষ্ট্র প্রথম দিকে একটু অসাবধানতার কারণে এ মহামারী রোগটা হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। এখন আক্রান্ত যে হচ্ছে না তা নয় । কিন্তু ধৈয্য ও সহনশীল মনোবল নিয়ে করোনার প্রথমিক যে সব চিকিৎসা রয়েছে তাতেই অধিকাংশ মানুষ করোনা জয় করছে ।
নিউ ইয়র্কে আমরা প্রায় দুই শ পঞ্চাশ জন বাংলাদেশী ভাই বোনদের হারিয়েছি । তবে টোটাল আক্রান্তের মধ্যে অধিকাংশই বাসা বাড়ি এবং হাসপাতালে ডাক্তারদের সংস্পর্ষে থেকে ভাল হবার নজির রয়েছে। এরকম বাংলাদেশী ডাক্তার নিউ ইয়র্কে যেমন ভাল হয়েছে তেমনি বাংলাদেশের ভাল হওয়ার নজির রয়েছে।
সাম্প্রতিক চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় দু'জন করোনা রোগী সনাক্ত হবার পর সামাজিক যোগাযোগ যেভাবে আর্তচিৎকার শুরু করেছে তাতে মনে হয় মৃত্যুর দূত এখন যেন রাউজানে ভর করেছে । কারো করোনা পজেটিভ হলে পরে বা ঐ রুগীর কি করবে বা কি করা উচিত তা তাকে বুদ্ধি পরামর্শ দিন। নিকটস্থ ডাক্তারের শরনাপন্ন হওয়ার জন্য হাত বাডিয়ে দিন। জনসংখ্যার তুলনায় আমাদের স্বাস্হ্য সেবা প্রদানের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে । তারপরও সরকার বসে নেই সাধ ও সাধ্যের মধ্যে চেষ্টা করে যাচ্ছে ।
করোনা ভাইরাস থেকে সাবধান থাকা এবং আক্রান্ত হলে পরে প্রাথমিক কি করতে হবে তা আমরা সবাই কম বেশী জানি । সে হিসাবে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি আপনার ধারে কাছে থাকে । তাকে সহযোগিতা করুন । কিভাবে করা যায় ।
দেশের স্বাস্হ্য সেবা প্রসঙ্গক্রমে বলছি, আমেরিকা একটি মহাদেশ। এখানে ৫২টি স্টেট এ মোট জনসংখ্যা হচ্ছে ৩২ কোটিরও বেশি। সব হাসপাতালগুলো বিশ্বের অন্যতম। যেখানে চিকিৎসা ফ্রি, ঔষুধ ফ্রি, ডাক্তার ফ্রি, এ্যাম্বুলেন্স ফ্রি সে হিসাবে আমাদের স্বাস্হ্য সেবার সীমাবদ্ধতা অনেক কম। আমেরিকার তুলনায় আমাদের জনসংখ্যা (প্রায় ১৬ কোটি) দেশ হিসেবে আমেরিকার অনেক অনেক ছোট, কিন্তু জনসংখ্যার দিক থেকে অনেক অনেক বড়। যা কল্পনাও করা যায় না। তারপরেও এ পর্যন্ত সরকার এবং জনগনের সম্মিলিত প্রয়াসে করোনা জয়ে যে ভুমিকা রাখছে। তাতে বিশ্বের সকল মিডিয়া সরকার প্রধানগন কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
তারপরও আমরা ঝড় তুফান ঘূর্নিঝড়, ক্ষুধা দারিদ্রত্যকে জয় করেছি বহুবার। যেগুলো বিশ্বের উন্নত অনেক রাষ্ট্রগুলো তাদের চিন্তা চেতনা ধারন করতে পারে না। আমরা অসীম সাহসী, একতা, ভ্রাতৃবোধ সৌহার্দ্য সহমর্মিতার মাধ্যমে যে কোন দূর্যোগ মোকাবেলার নজির রয়েছে ।
কানাডার একটি স্টেট সেন্ট জনস নিউফ্যান্ডল্যান্ড এ আমাদের বাংলাদেশী চীফ মেডিকেল বিশেষজ্ঞ ডাক্তরের ব্যবস্হপনায় পুরো রাজ্যে করোনা জয় করেছে । নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশী দু'জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তরের চিকিৎসায় ৯৫% করোনা রুগি ভাল হওয়ার নজীর স্হাপনে সিএনএন / সিবিএস / ফক্স নিউজে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আমরা যে কোন দুর্যোগই যে জয়ী হই এটি তার প্রমান ।
যা বলছিলাম ৩২ কোটি মানুষের জীবন বাঁচাতে বিশ্বের পরাশক্তির প্রধান ট্রাম্প তার বিশাল বাহিনী নিয়ে যে গলদগর্ম সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তার অর্ধেক ১৬ কোটি মানুষের জীবন বাঁচাতে যে নিরলস প্রচেষ্টা তাকে ছোট করে দেখার কিছু নেই। বরং আমাদের প্রধানমন্ত্রীর এ বিশাল সাহস, ধৈর্য্যের মধ্যে এ করোনা মোকাবিলা করছে তা সত্যিই বিরল।
আসুন সরকারকে সুপরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করি। এ ঈদ উপলক্ষ্যে দেশের অধিকাংশ মানুষ যেমন মার্কেট শপিং সেন্টার বন্ধ রেখে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন তেমনি অনেক বিত্তবান মহৎ ব্যক্তি বিভিন্ন ওয়েতে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। এখন আমরা সরকারকে বলব, যে কোন উপায়ে করোনার টেস্ট কার্যক্রম আরো বিস্তৃত্ করা হোক।
সৈয়দ মাহমুদ তসলিম
প্রবাসী সাংবাদিক, বাফেলো, নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র