সরকারের অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আকস্মিকভাবে অল্প কিছু সময়ের ব্যবধানে তাদের পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। তাদের এই পদত্যাগের ফলে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি কনজারভেটিভ সরকারের সংকট আরও গভীর হলো।
জনসন এর আগে এতো বড়ো বিপদের মুখে কখনো পড়েননি। এখন এই সংকট কাটিয়ে তিনি ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন কি-না সেটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যৌন অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত একজন এমপি ক্রিস পিঞ্চারকে তার সরকারে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জনসন দুঃখ প্রকাশ করার পর এই দুই মন্ত্রী তাদের পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
পিঞ্চারের বিরুদ্ধে যৌন অসদাচরণের অভিযোগ ওঠার পর গত সপ্তাহে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে তার এমপি পদ বাতিল করা হয়। প্রধানমন্ত্রী জনসন স্বীকার করেন এমন একজন ব্যক্তি যে সরকারি চাকরির জন্য যোগ্য নন সেটা বুঝতে না পেরে তিনি ভুল করেছেন।
এর আগেও বরিস জনসনের বিরুদ্ধে কোভিড মহামারির বিধি-নিষেধ ভঙ্গ করে পার্টি আয়োজনের অভিযোগ ওঠেছে। এ জন্য পুলিশ তাকে জরিমানাও করেছে।
এই দুই মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কাছে লেখা পদত্যাগ পত্রে সরকার পরিচালনার মান বজায় রাখতে জনসনের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ঋষি সুনাক বলেছেন, জনগণ আশা করে যে যথাযথভাবে, দক্ষতা ও গুরুত্বের সঙ্গে সরকার পরিচালিত হবে।
করোনাভাইরাস মহামারির সময় জনগণ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য নানা ধরনের অর্থ সহযোগিতার কথা ঘোষণা করে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এই অর্থমন্ত্রী জনপ্রিয় ও আলোচিত হয়ে ওঠেন।
আর সাজিদ জাভিদ জানান, একের পর এক কেলেঙ্কারির পর তিনি মনে করেন না যে এই সরকারের সঙ্গে কাজ অব্যাহত রাখতে পারবেন।
তিনি বলেন, অনেক এমপি ও জনগণ জাতীয় স্বার্থ বজায় রাখার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী জনসনের ক্ষমতার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ রাজনীতিক সাজিদ জাভিদ এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
স্বাস্থ্য ও অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগের পর বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা কিয়ের স্টার্মার বলেছেন, এটা এখন পরিষ্কার যে সরকার ভেঙে পড়ছে।
মাত্র গতমাসেই প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার দলের এমপিদের এক আস্থা ভোটে জয়ী হন। যদিও দলের বিশাল সংখ্যক এমপি তার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন। এ কারণে ব্রিটিশ আইন অনুসারে আগামী এক বছর প্রধানমন্ত্রী জনসনের বিরুদ্ধে নতুন করে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করা যাবে না।
তবে কয়েকজন এমপি তাকে ক্ষমা থেকে সরানোর জন্য এই আইন পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন।