এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর মুদ্রায় রিজার্ভ সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। ফলে তারা চীনা মুদ্রা ইউয়ান, ভারতীয় মুদ্রা রুপি, তুরস্কের মুদ্রা লিরা কিনছে। লক্ষ্য হচ্ছে, এই দেশগুলোর সঙ্গে নিজস্ব মুদ্রাবিনিময়ের মাধ্যমে বাণিজ্য করা।
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, তারা এখন রুবলের বিনিময়মূল্য বাজারের ওপর ছেড়ে দিচ্ছে। তবে কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি জরুরি আবার চালু করা দরকার। কারণ, তারা মনে করছে তেল বিক্রির অতিরিক্ত অর্থ আপৎকালীন তহবিলে রাখা জরুরি।
তবে এসব মুদ্রার বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে সতর্ক বাণী দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, এসব মুদ্রার প্রাপ্যতা নিয়ে অনিশ্চয়তা যেমন আছে, তেমনি ঝুঁকিও আছে। জুন মাসে তুরস্কের মূল্যস্ফীতি ২৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশে উঠেছে বলে জানিয়েছে তারা।
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রথম ডেপুটি গভর্নর আলেক্সেই জাবোৎকিন শুক্রবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছেন। তিনি সেদিন বলেন, ইউয়ান-রুবল বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তারল্য ইউরো-রুবলের তারল্যের পর্যায়ে চলে গেছে। বছরের প্রথম ছয় মাসে ইউয়ানের গড় দৈনিক লেনদেন ১২ গুণ বেড়েছে।
এর আগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চীনের মুদ্রা ইউয়ান দিয়ে রাশিয়ার কাছ থেকে কয়লা কিনছে ভারত। তবে এবার শুধু ইউয়ান নয়; আরব আমিরাতের দিরহাম ও হংকংয়ের ডলার ব্যবহার করে ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে কয়লা কিনছে বলে জানা গেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরই রাশিয়া থেকে তেল ও কয়লা কেনা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে ভারত। এসব কারণে নিষেধাজ্ঞার আঁচ মস্কোর গায়ে তেমন একটা লাগছে না। বিনিময়ে কাঁচামাল কেনার ক্ষেত্রে ভারতকে অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি ছাড় দিচ্ছে রাশিয়া।
জুন মাসে রাশিয়ার কয়লা কিনতে যে পরিমাণ ডলার-বহির্ভূত মুদ্রা ব্যবহার করা হয়েছে, তার ৩১ শতাংশ ছিল ইউয়ান ও ২৮ শতাংশ ছিল হংকং ডলার। ইউরো ব্যবহার করা হয়েছে ২৫ শতাংশের কম এবং আমিরাতের দিরহাম ব্যবহার করা হয়েছে প্রায় ৬ ভাগের ১ ভাগ।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে নতুন বিশ্বব্যবস্থা গড়ে ওঠার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। হার্ড কারেন্সি হিসেবে ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করে নিজস্ব মুদ্রাবিনিময়ের মাধ্যমে ব্যবসা করার চেষ্টা করছে রাশিয়া, চীন, ভারতসহ বেশ কিছু দেশ।