কিন্তু দুঃখের বিষয়, সরকারের আন্তরিক চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও ঈদকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার মানুষ গ্রামমুখী হচ্ছেন। এদের কেউ সামাজিক দূরত্ব মানছেন না বললেই চলে। এমনকি অনেকে মাস্কও ব্যবহার করছেন না বা হাতে পলিগ্লাভসও নেই। গা ঘেঁষে, বসে দাঁড়িয়ে গ্রামের দিকে ছুটছেন। এটা একেবারেই বড় রকমের ভুল।
ঈদের দিনের সমস্যা : আপনি কি ঈদের নামাজে যাবেন? এটা নিয়ে আমাদের ইসলামিক ফাউন্ডেশন যা বলেছে সেটা মেনে চলা উচিত। এবার মসজিদের বাইরে কোথাও ঈদের জামাত হবে না। তারা আরও বলেছেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে নামাজ পড়তে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সামাজিক দূরত্ব বলতে বুঝিয়েছে, একজন মানুষ থেকে আরেকজন মানুষকে ৬ ফুট বা ২ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এ জন্য সংস্থাটি বারবার তাগিদ দিয়ে আসছে। নামাজ পড়ে দেরি করা যাবে না। কোলাকুলি এবং হ্যান্ডশেক কিছুতেই করা যাবে না। ছোট বচ্চাদের চুম্বন বা আলিঙ্গন করা যাবে না। কদমবুসি বা পা চুম্বন না করাই উত্তম।
ঈদের দিনে আরও একটি জিনিস খেয়াল রাখতে হবে, সেটা হলো ফিতরা কিংবা ভিক্ষা দেওয়া এবং অন্যান্যভাবে টাকার নোট বা কয়েন লেনদেনের বিষয়টি। মনে রাখতে হবে টাকার নোট বা কয়েনের মাধ্যমেও কভিড-১৯-এর জীবাণু ছড়ানোর একটা সম্ভাবনা থেকে যায়। তবে টাকার নোট যদি নিরাপদ স্থানে চার দিনের মতো ফেলে রাখা হয়, তাহলে সাধারণত জীবন্ত কভিড-১৯ জীবাণু বেঁচে থাকতে পারে না। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে না গিয়ে টেলিফোনে শুভেচ্ছা জানান।
এবার আসা যাক খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে। ঈদের দিন অনেকেই বাইরে থেকে অর্ডার দিয়ে খাদ্যদ্রব্য এনে থাকেন। এবার কভিড-১৯-এর মহামারীর সময় বাইরে থেকে অর্ডার দিয়ে খাবার না আনাই নিরাপদ। সব খাবার ঘরে বানান এবং খুব ভালো করে সিদ্ধ করে রান্না করুন। কাঁচা খাবার লেটুস ইত্যাদি, কেক, পেস্ট্রি না খাওয়াই ভালো। আধা সিদ্ধ ডিম পরিহার করা উচিত। আর বিশেষ ধরনের কাবাব যা আগুনে পুড়িয়ে তৈরি করা হয়, এগুলোর মাঝখানটা পুরোপুরি সিদ্ধ নাও হতে পারে। সুতরাং এগুলো না খাওয়াই উচিত।
ঈদের দিনও প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করুন, পলিগ্লাভস ব্যবহার করুন। ঘরে থাকুন নিজে নিরাপদ থাকুন এবং প্রিয়জনকে নিরাপদ রাখুন। আসুন আল্লাহর কাছে মোনাজাত করি, কভিড-১৯ সহ সব বালা-মুসিবত থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন। আমিন।
লেখক : অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং রোগ বিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক।