উৎসবে বাজি-পটকা কতটা ক্ষতিকর?

উৎসবে বাজি-পটকা কতটা ক্ষতিকর?
যে কোনো উৎসবে কিংবা উদযাপনেই বাজি কিংবা পটকা ফাটানোর প্রচলনের মাত্রাটা খুব বেশি পরিমাণে লক্ষ করা যায়। হোক সেটা নতুন বছরকে বরণ কিংবা অন্য কোনো উৎসব। আমজনতার মাঝে সবসময়ই এই উদযাপনকে ঘিরে বাজি-পটকা নিয়ে উৎকণ্ঠা দেখা যায়।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই বাজি-পটকা পরিবেশ ও মানুষের জন্য কতটা ক্ষতিকর? বাজি-পটকার মধ্যে থাকে সহজদাহ্য মিশ্রণ। এতে ব্যবহার করা হয় পটাশিয়াম ক্লোরেট বা পটাশিয়াম নাইট্রেট। এ ছাড়া দাহ্যপদার্থ হিসেবে থাকে কাঠ-কয়লার গুঁড়ো, সালফার বা গন্ধক ইত্যাদি। মূলত এসব পদার্থগুলো আগুন জ্বলতে সহায়তা করে। কিন্তু বর্তমানে আরো একটি পদার্থ এই আতশবাজি, তুবড়ি বা হাওয়াই বাজি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। আর সেটি হলো বারুদ।

সাধারণত তুবড়ির খোলের মধ্যে বারুদ ঠেসে ভর্তি করে নেওয়া হয়। এর সঙ্গে লোহার গুঁড়ো বা অ্যালুমিনিয়াম-পাউডার মিশিয়ে নেওয়া হয়। তুবড়ির মুখে আগুন ধরিয়ে দিলে বারুদ জ্বলে ওঠে এবং জ্বলন্ত আগুন ফোয়ারার মতো ওপরে উঠে যায় আর আলোর ফুলকি ছিটকে বেরোতে থাকে। আতশবাজির নিচের দিকে থাকে বারুদ আর ওপরে নানারকম আতশবাজির মসলা। তাতে আগুন ধরিয়ে দিলেই তা প্রচণ্ড বেগে আকাশের দিকে ছুটে যায়।

এতে জ্বালানি হিসেবে কার্বন ও সালফার ব্যবহৃত হয়, যা পুড়ে গেলে কার্বন মনোঅক্সাইড,কার্বন ডাই-অক্সাইড,সালফার ডাই-অক্সাইড প্রভৃতি গ্যাস উৎপন্ন হয়। এসব স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। কার্বন মনোঅক্সাইড গ্যাস ফুসফুসের মাধ্যমে শরীরের রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। যা কার্বক্সিহিমোগ্লোবিন উৎপন্ন করে।

ফলে রক্তের অক্সিজেন পরিবহন করার ক্ষমতা বিনষ্ট হয়। তা ছাড়া মাথাধরা, ক্লান্তি ভাব এবং আর নানারকম উপসর্গও দেখা দেয়। সালফার ডাই অক্সাইড গ্যাস, শ্বাসনালি এবং ফুসফুসে ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। তাছাড়া এ গ্যাস বাতাসে থাকলে তা বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে তৈরি করে সালফিউরাস ও সালফিউরিক অ্যাসিড। এসব অ্যাসিড ত্বকের ক্ষতিসাধন করে।

স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের মতে, বাজি-পটকা থেকে উৎপন্ন লেড বা সিসার অক্সাইডের বিষক্রিয়ায় রক্তশূন্যতা, দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অসাড়তা প্রভৃতি রোগ হতে পারে। অ্যান্টিমনি দূষণের ফলেও অনেকটা এ রকম হয়ে থাকে।

আর্সেনিক দূষণের ফলে দুরারোগ্য চর্ম রোগ এবং যকৃতের রোগ হতে পারে। শরীরবিদদের মতে, আর্সেনিকের বিষক্রিয়া শরীরের প্রভূতি ক্ষতিসাধন করতে পারে। ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি ধাতু জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়া চালানোর জন্য খুবই প্রয়োজন। তবে এর মাত্রা বেশি হয়ে গেলে শরীরে দেখা দেয় নানা রকম বিপত্তি। আতশবাজি-পটকা থেকে নির্গত ধোঁয়ার সঙ্গে এসব পদার্থ প্রথমে ফুসফুসে যায়। তারপর রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। তাই এর ফলে দেহে নানা রকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

অর্থসংবাদ/এমআই

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

কাজে লাগান পুরনো টুথব্রাশ
খরচ কমাতে বছরের শুরু থেকেই করুন এই ৫ অভ্যাস
শীতে যে ৪ খাবার বাদ দেবেন না
উৎসবে বাজি-পটকা কতটা ক্ষতিকর?
শীতে কোন সময় গোসল করলে শরীর থাকবে সুস্থ?
গলাব্যথা সারাতে কেন লবণ-পানি পান করবেন
কাঠবাদামের তেল কতটা উপকারী?
সপ্তাহে ১ দিন শ্যাম্পু করলেই দূর হবে খুশকি
সর্দি-কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায়
জাল নোট চেনার সাত উপায়