নতুন বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে এক হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ খাতে সরকারের বরাদ্দ রয়েছে ৭৪ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। এটি মোট বাজেটের ১৪ দশমিক ২১ শতাংশ এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৭৬ হাজার কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, আগামী বছর এ খাতের সুবিধাভোগীর সংখ্যাও বাড়ানো হবে। করোনার কারণে আগামী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আর্থিক সুবিধাভোগীর সংখ্যা এ বছর ১৬ লাখ ১৫ হাজার বাড়িয়ে ৯৭ লাখ ১৫ হাজারে উন্নীত করতে চায় সরকার। বর্তমানে এ খাতে উপকারভোগীর সংখ্যা ৮১ লাখ। এর আওতায় বাড়বে সম্মানী ভাতা পাওয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা। বাড়ানো হবে বয়স্কভাতা পাওয়া উপকারভোগীর সংখ্যাও। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, স্বামীর নিগ্রহের শিকার নারী উপকারভোগীর সংখ্যাও বাড়ছে বলে জানা গেছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘বর্তমানে প্রায় দুই লাখ মুক্তিযোদ্ধা প্রতিমাসে ১২ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা পাচ্ছেন। চলতি বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আগামী বাজেটে সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হবে। তারা উৎসব ভাতা হিসেবে ১০ হাজার, নববর্ষ ভাতা হিসেবে দুই হাজার এবং বিজয় দিবস ভাতা পাঁচ হাজার টাকা করে পাচ্ছেন, তা অপরিবর্তিত থাকছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মাসে ৫০০ টাকা হারে বয়স্কভাতা পাওয়া উপকারভোগীর সংখ্যা বর্তমানে ৪৪ লাখ। এ কর্মসূচির আওতায় আগামী বাজেটে উপকারভোগীর সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এছাড়া প্রতি মাসে ৫০০ টাকা হারে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা পাচ্ছেন। বর্তমানে এমন উপকারভোগীর সংখ্যা ১৭ লাখ। আগামী বাজেটে এ খাতেও উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়বে।
বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ অসচ্ছল প্রতিবন্ধী উপকারভোগী প্রতি মাসে ৭০০ টাকা হারে ভাতা পাচ্ছেন। আগামী বাজেটে তাদের সংখ্যাও বাড়ানো হবে। বর্তমানে বিভিন্ন স্তরে এক লাখ উপকারভোগী প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বিভিন্ন হারে এ ভাতা পাচ্ছেন। আগামী বাজেটে এ সংখ্যাও বাড়ানো হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে সৃষ্ট জটিলতার মধ্যেই ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ৫০ হাজার কোটির বেশি টাকার বাজেট প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১১ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের কথা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ জানিয়েছেন, প্রতি বছরই সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের পরিধি বাড়ে। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না। প্রতি বছর এ খাতের উপকারভোগীর সংখ্যা ১০ শতাংশ হারে বাড়লেও এ বছর ২০ শতাংশ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এছাড়া বরাদ্দও বাড়বে।
অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা, উৎসব ভাতা, বিজয় দিবস ভাতা সব ঠিক থাকবে। গেজেটে নতুন যারা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তারাও এ বছর সরকারের দেওয়া বিভিন্ন ভাতা পাবেন।