ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, গতকাল সোমবার রাতে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনা বাহিনী অনুপ্রবেশ করে আচমকা আক্রমণ করে কর্নেল ও দুই সেনাকে হত্যা করে। পাল্টা আক্রমণের পর সংঘর্ষ বেঁধে গেলে উভয়পক্ষে ব্যাপক হতাহত হয়।
ভারতের পক্ষ থেকে প্রথমে ওই কর্নেলসহ তিন সেনা নিহত হওয়ার কথা বলা হলেও আজ মঙ্গলবার জানানো হয়, গুরুতর আহত সেনাদের মধ্যে অনেকে মারা গেছেন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ জনে।
ভারত বলছে, চীনের পক্ষ থেকে বিনা উসকানিতে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার উদ্দেশ্য নিয়েই অনুপ্রবেশ করা হয়। এরপরই উত্তেজনা। তবে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, ভারতীয় সেনারাই সীমা লঙ্ঘন করে চীনের ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করে এবং চীনা সেনাদের উত্তেজিত করার চেষ্টা করে।
লাদাখের বিরোধপূর্ণ সীমান্তে বেশ কিছুদিন ধরেই ভারত ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গতকাল সোমবার রাতে গালওয়ান উপত্যকায় যখন উত্তেজনা প্রশমনের প্রক্রিয়া চলছিল তখনই দুপক্ষের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুপক্ষেই বেশ কয়েকজন হতাহত হন।
১৯৬২ সালে সীমান্তে দুই দেশ সংঘাতে জড়ায় এবং ১৯৭৫ সালের পর গতকালই ভারত-চীন সীমান্তে সর্বাধিক প্রাণঘাতী সংঘাত ঘটল।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পরিস্থিতি মূল্যায়নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছেন। এরই মধ্যে দুইবার সেনাপ্রধানের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে তার।
এদিকে বর্তমানে ঘটনাস্থলেই দুই দেশের উর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেছেন। তারা গত রাতের সংঘর্ষের পর এখন আলোচনার মাধ্যমে একটা মিটমাটের মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
গত প্রায় দেড় মাস ধরেই লাদাখে ভারত ও চীনের মধ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এলএসি) দুপক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা চলছে, দুই দেশের সেনাবাহিনীও মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। সেনা সংখ্যাও ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে।
একাধিক সূত্রে খবর বেরিয়েছে, এর আগে উত্তেজনার মধ্যেই এক পর্যায়ে চীনা সেনারা এলএসি অতিক্রম করে ভারতীয় ভূখণ্ডের ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে পড়েছিল। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বেশ হইচই হলেও ভারত সরকার এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।