বইতে জন বোল্টন জানিয়েছেন, দ্বিতীয় দফায় নিজের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত করতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে খারাপ জনতুষ্টির উদাহরণ বলে মন্তব্য করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন জন বোল্টন। বুশ প্রশাসনের অধীনে জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে আসা এই সাবেক কূটনীতিককে ২০১৮ সালের এপ্রিলে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে পরের বছরের সেপ্টেম্বরেই তাকে বিদায় করে দেওয়া হয়।
বেশ কিছু চুপ করে থাকার পর এ বছর একটি বই প্রকাশের ঘোষণা দেন মার্কিন আগ্রাসী পররাষ্ট্র নীতির সমর্থক বোল্টন। ‘দ্য রুম হয়ার ইট হ্যাপেন’ শিরোনামে ৫৭৭ পৃষ্ঠার বইটি আগামী ২৩ জুন প্রকাশের কথা রয়েছে। তবে তা আটকানোর চেষ্টায় রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। প্রকাশনাটি আটকাতে গত বুধবার রাতে এক বিচারকের কাছে জরুরি আদেশ চেয়েছে মার্কিন বিচার বিভাগ। এছাড়া জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসের তরফে বলা হয় বইটিতে অতি গোপনীয় বিষয় রয়েছে। সেগুলো সরিয়ে ফেলতে বলা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানান বোল্টন। এই সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, বইটি নিয়ে অপরাধ জনিত সমস্যায় পড়তে পারেন বোল্টন।
ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশ হওয়া বইটির সারাংশতে গত বছরের জুনে ওসাকা শহরে জি২০ সম্মেলনের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যকার এক বৈঠকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বইতে বোল্টন লিখেছেন, ওই বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু চীন সমালোচক ওয়াশিংটন-বেইজিংয়ের মধ্যে নতুন স্নায়ু যুদ্ধ শুরু করাতে চান। ট্রাম্প ধারনা করেন তারা হলো তার বিরোধী ডেমোক্র্যাট শিবির। বোল্টন লিখেছেন, ‘ট্রাম্প আকস্মিকভাবে আলোচনাটি আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে ঘুরিয়ে নেন, চীনের অর্থনৈতিক সক্ষমতার দিকে ইঙ্গিত করেন এবং তার নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত করতে শি জিনপিংয়ের সাহায্য চান।’ নির্বাচিত হলে ট্রাম্প চীনের সয়াবিন ও গম কেনা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন বলে জানিয়েছেন বোল্টন। বাণিজ্য আলোচনায় কৃষি পণ্যকে অগ্রাধিকার দিতে শি জিনপিং সম্মত হলে তাকে ‘চীনা ইতিহাসের মহান নেতা’ বলে আখ্যা দেন ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে বরাবরই চীনের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক অবস্থান নিয়েছে। উইঘুর মুসলমানদের সঙ্গে চীনের আচরণ নিয়ে প্রকাশ্যে কঠোর অবস্থান অবস্থান নিয়ে আসছেন ট্রাম্প। বুধবার হোয়াইট হাউসের তরফে বলা হয়েছে, জিনজিয়াং প্রদেশে মুসমান নিপীড়নের দায়ী চীনা কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপে কেবলই একটি আইনে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প।