প্রথমত, তিনি পরিবারের জ্বালানি ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাতে পারিবারিক জ্বালানি ব্যয় ২০২৪ সাল পর্যন্ত বার্ষিক ২ হাজার ৫০০ পাউন্ডের বেশি হবে না। স্বাভাবিকভাবেই এ জন্য সরকারকে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হবে।
বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে, ভর্তুকিকে এখনই অর্থের অঙ্কে পরিমাপ করতে চান না তিনি। বলেছেন, ‘এখন সময়টা অস্বাভাবিক, তাই ব্যবস্থাও নিতে হবে সে রকম।’
লিজ ট্রাসের এই পদক্ষেপের বড় দিক হলো, শুধু পরিবার নয়, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোও ভর্তুকি পাবে। তবে পরিবারের মতো তাদের দুই বছর ধরে এই ভর্তুকি দেওয়া হবে না, তারা ভর্তুকি পাবে ছয় মাসের জন্য। যদিও অনেকে আশা করেছিলেন, আরও কিছুটা সময়ের জন্য এই ভর্তুকি দেওয়া হবে।
ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসের সবাই এই সহায়তা পাবেন আর উত্তর আয়ারল্যান্ডের জন্য দেওয়া হবে সমপরিমাণ সহায়তা।
ভর্তুকির পরিমাণ অনেক বেশি হলেও কিছু কিছু বিষয়ে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। তাঁদের অভিযোগ, এই কর্মসূচির লক্ষ্যবস্তু সুনির্দিষ্ট নয়, অর্থাৎ যারা সবচেয়ে দুর্বল বা অরক্ষিত, তাদের অতিরিক্ত সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা নেই এতে। ফলে লাখ লাখ মানুষ এই শীতকালে জ্বালানি দারিদ্র্যের কবলে পড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আগের ব্যবস্থা অনুযায়ী, আগামী অক্টোবর মাসে যুক্তরাজ্যে জ্বালানির মূল্যসীমা ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার কথা ছিল। এতে সে দেশের পরিবারের বার্ষিক জ্বালানির ব্যয় দাঁড়াত ৩ হাজার ৫৪৯ পাউন্ড। এই বাস্তবতায় যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের আশঙ্কা, সে দেশের কয়েক কোটি মানুষ শীতের সময় জ্বালানি দারিদ্র্যের কবলে পড়বে। এমনকি অনেক মানুষ সামগ্রিকভাবে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে। সে জন্য তিনি আগেই নতুন প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশেষ জ্বালানি তহবিল গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিপুল অঙ্কের ভর্তুকি দিতে যাচ্ছেন।
বিষয়টি হচ্ছে, যুক্তরাজ্য সরকার জ্বালানির দামের সীমা বেঁধে দেওয়ার কারণে কোম্পানিগুলো নির্ধারিত মূল্যে তেল, গ্যাস বিক্রি করতে বাধ্য। তাদের ক্রয়মূল্য ও বিক্রয়মূল্যের মধ্যে যে পার্থক্য থাকবে, সেই অর্থ সরকার পরিশোধ করে দেবে। সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ নির্ভর করবে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দামের ওপর। ফলে ভর্তুকির পরিমাণ ঠিক কত দাঁড়াবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।
এমনিতেই গত দুই বছরে মহামারি ক্ষতি মোকাবিলায় জনগণকে প্রণোদনা দিতে যুক্তরাজ্য সরকারকে বিপুল পরিমাণে ঋণ করতে হয়েছে। এখন যে ভর্তুকি তারা দেবে, সেই অর্থও তাদের ঋণ করতে হবে। ফলে যুক্তরাজ্য সরকারের ঋণ অনেকটা বেড়ে যাবে।