ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড ট্রান্সেলেশন অ্যালার্জিতে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, কাঁচা এবং ফার্মেন্টেড বাঁধাকপি নতুন এই রোগটির বিরুদ্ধে খুব উপকারী হতে পারে।
বাঁধাকপির জুস এমনিতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ত্বক সতেজ রাখে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি চুলের জন্যও দারুণ উপকারী।
এই জুস তৈরি করতে বাঁধাকপির পাতাগুলো ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এরপরে ব্লেন্ডারে দিয়ে জুস বানিয়ে নিন। জুসের তেতো ভাব কমাতে লেবুর রস, পুদিনাপাতা কিংবা মধু যোগ করতে পারেন।
জার্মানি এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষদের ডায়েট লিস্টে এই ধরনের খাবার বেশি থাকে। ঠিক এ কারণে দেশটিতে কভিড-১৯ রোগে মৃত্যুর হার কম হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা গবেষকদের।
একইভাবে গ্রিস, বুলগেরিয়া এবং তুরস্কের মতো দেশের মানুষেরা ফার্মেন্টেড দুধ বা দইয়ের মতো খাবার বেশি খায় বলে তাদেরও মৃত্যুহার কম।
এ বিষয়ে ডব্লিউএইচও’র সাবেক বিশেষজ্ঞ জিন বাউসকেট বলেছেন, ‘অঞ্চল ভিত্তিক ডায়েটের ওপর নজর দিয়ে বোঝা যাচ্ছে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনলে উপকার পাওয়া যাবে। কভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে নিউট্রেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’
জিন বাউসকেট জানিয়েছেন তিনি নিজে এখন তার ডায়েট চার্ট পরিবর্তন করেছেন, ‘আমার ডায়েট চার্টে এখন কাঁচা বাঁধাকপি যুক্ত করেছি। সপ্তাহে তিনবার। সাউরক্রাত (কাঁচা বাঁধাকপির তৈরি বিশেষ ফার্মেন্টেড রেসিপি) একবার। পাশাপাশি ব্রেকফাস্টে দই এবং শাকসবজি।’
যারা কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে ডায়ালাইসিস করিয়ে থাকেন, চিকিৎসকেরা তাদের কাঁচা বাঁধাকপি সুন্দর করে কেটে কাঁচা খাওয়ার পরামর্শ দেন।
গবেষণায় বলা হয়েছে, এই ধরনের খাবার এসিই-২ এনজাইমের মাত্রা কমায়। যার কারণে কভিড-১৯’র ঝুঁকি কমে যায়।
আগে কয়েকটি গবেষণায় বলা হয়েছে যাদের প্লাজমাতে বেশি পরিমাণে অ্যানজিওটেনসিন-রূপান্তরকারী এনজাইম ২ (এসিই-২) থাকে, সম্ভবত তারা কভিড-১৯-এর ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণ। এসিই-২ হলো হেলথি কোষগুলোর পৃষ্ঠে উপস্থিত একটি রিসেপ্টর। কভিড-১৯-এর কার্যকারক এজেন্ট SARS-CoV-2 কোষের অভ্যন্তরে প্রবেশ করার জন্য এই রিসেপ্টরটি ব্যবহার করে। এসিই-২ রিসেপ্টরগুলো ফুসফুস, হার্ট, কিডনিতে প্রচুর পরিমাণে থাকে, যাকে কভিডের ‘প্রবেশপথ’ বলা হয়।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন গাঁজন জাতীয় খাবার এবং বাঁধাকপি এসিই-২কে কমিয়ে ‘ন্যাচারাল ভাইরাস’ ব্লকার হিসেবে কাজ করে।