সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বাড়ছে বিশ্বজুড়ে। কমবয়সীসহ সবাইকেই বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে এখন সতর্ক থাকতে বলছেন। অনেকেই হয়তো জানেন, শীতে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বেড়ে যায়। তবে এর পেছনে কারণ কী চলুন তা জেনে নেওয়া যাক।
বহু সমীক্ষায় দেখা গেছে, শীতে হার্ট অ্যাটাক ছাড়াও হার্টের অন্যান্য সমস্যাসহ স্ট্রোকের ঘটনাও বেড়ে যায়। এর কারণ হলো শীতে আমাদের শরীরে স্নায়ুব্যবস্থার ‘সিমপ্যাথেটিক অ্যাক্টিভেশন’ বেড়ে যায়। তাই রক্তনালি সঙ্কুচিত হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। একে বলে ভ্যাসোকনস্ট্রিকশন।
এমনটি ঘটলে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায়। তাই পুরো শরীরে রক্ত সরবারহ করতে হৃদযন্ত্র দ্বিগুণ গতিতে কাজ করে। এক্ষেত্রে বাইরের তাপমাত্রা অনেকটা কমলে, শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে অসুবিধা হয়।
তাতে হাইপোথার্মিয়া হতে পারে যাকে হৃদযন্ত্রের রক্তনালির ক্ষতি হয়। যাদের এমনিতেই হৃদরোগ আছে, তাদের শরীর এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হিমশিম খায়। শীতে আবার শরীরের অক্সিজেনের প্রয়োজন বেড়়ে যায়।
অন্যদিকে ভ্যাসোকনস্ট্রিকশনের জন্য এমনিতেই রক্তনালি সরু হয়ে যায়। তাই হৃদযন্ত্রে কম অক্সিজেন পৌঁছায়। এতেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
শীতে হার্ট অ্যাটাক রোধে যেভাবে সতর্ক থাকবেন-
১: ঠান্ডা আবহাওয়ায় ঘর থেকে অযথা বের হবেন না। বের হলেও গরম পোশাক পরুন। বিশেষ করে মাথা, হাত, পা ভালো করে টুপি, মোজা, জুতা দিয়ে ঢেকে তবে বাইরে বের হন।
২: আবার একসঙ্গে অনেকগুলো গরম পোশাকও পরবেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, অত্যধিক গরম পোশাক শরীরের উষ্ণতা আরও বাড়িয়ে দেয়। যা শরীরে রক্ত সঞ্চালনে প্রভাব ফেলে।
এ কারণে বেশি গরম পোশাক একসঙ্গে পরলে রক্তচাপ হঠাৎ কমে যেতে পারে। এর থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
৩: ঠান্ডা আবহাওয়ায় জ্বরের সমস্যাতেও ভোগেন অনেকেই। শীতকালে জ্বর হলে তার থেকে হৃদরোগ দেখা দেওয়ারও ঝুঁকি থাকে। তাই জ্বর কিংবা ঠান্ডা লাগার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৪: শীতে অ্যালকোহল সেবন বা মদ্যপান বর্জন করা দরকার। মদ্যপান শরীরে রক্ত সঞ্চালনে প্রভাব ফেলে শরীর গরম করে দেয়। শীতে শরীরের ভেতরে গরম ও বাইরের ঠান্ডা আবহাওয়া হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
৫: নিয়মিত শরীরচর্চা করা বন্ধ করবেন না। শরীরচর্চা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
৬: নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করুন। শীতে বাইরে ঠান্ডা আর শরীরের ভেতরে গরম হওয়ার কারণে রক্তচাপে প্রভাব পড়ে। তাই নিয়মিত মাপুন রক্তচাপ। বেশি হলে রক্তচাপ কমান ও চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক চলুন।
৭: শীতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এর সঙ্গে নজর রাখুন দ্যাভ্যাসেই। হালকা খাবারের সঙ্গে টাটকা ফল, সবজিও পাতে রাখা দরকার।