অনেকের মধ্যেই ডেঙ্গু নিয়ে এখনো প্রচলিত নানা ভুল ধারণা আছে। এসব কুসংস্কার মানা কারও জন্যই উচিত নয়। এই রোগ থেকে রক্ষা পেতে এ ধরনের কুসংস্কারগুলো এড়িয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক ডেঙ্গু সম্পর্কিত ৫টি কুসংস্কার-
ডেঙ্গু কোভিডের চেয়ে হালকা
দুটি ভিন্ন রোগজীবাণু দ্বারা সৃষ্ট দুটি ভিন্ন রোগ ডেঙ্গু কোভিড। তাই এই দুটি রোগের মধ্যে তুলনা করা অর্থহীন। মনে রাখবেন এই ডেঙ্গু ও কোভিড দুটোই মারাত্মক শারীরিক ঝুঁকির সৃষ্টি করতে পারে।
ডেঙ্গু ও কোভিড কখনো একসঙ্গে হয় না
এ ধরনের বেশ কয়েকটি উদাহরণ দেখা গেছে যেখানে, ডেঙ্গু ও কোভিড একই সময়ে মানুষের মধ্যে ঘটেছে। সিঙ্গাপুর, ভারত, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশে এই ধরনের সহ-সংক্রমণের ঘটনার উল্লেখ মিলেছে।
ডেঙ্গু প্রাণঘাতী নয়
মানুষের জানা উচিত যে ডেঙ্গু হাড় ভাঙা জ্বর নামেও পরিচিত। ডেঙ্গুর সঙ্গে যুক্ত ব্যথা সহ্য করা কঠিন। ডেঙ্গু খুবই বিপজ্জনক ও গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা করা না হলে শরীরের উপর দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
ডেঙ্গু জীবনে একবারই হয়
না! বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, চারবার সংক্রামিত হওয়া সম্ভব ও দ্বিতীয়বার প্রথমবারের চেয়ে গুরুতর হতে পারে। ডেঙ্গুর ভাইরাসের চারটি সেরোটাইপ আছে, যা ডেঙ্গু সৃষ্টি করে।
যে সেরোটাইপে রোগী আক্রান্ত হবেন পরবর্তী সময়ে সেটির বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ফলে অন্যান্য সেরোটাইপে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
কারণ সংক্রমণ শুধু ডেঙ্গুর নির্দিষ্ট ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রদান করে, অন্যদের থেকে নয়। পুনরুদ্ধারের পরে অন্যান্য সেরোটাইপের ক্রস-ইমিউনিটি শুধুমাত্র আংশিক ও অস্থায়ী।
পরবর্তী সংক্রমণ (সেকেন্ডারি ইনফেকশন) অন্যান্য সেরোটাইপগুলোর দ্বারা মারাত্মক ডেঙ্গু হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
পেঁপে পাতার নির্যাস ডেঙ্গু সারাতে পারে
অনেকেরই হয়তো জানা যে, পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গুর সময় প্লেটলেটের সংখ্যা উন্নত করতে সাহায্য করে। যদিও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এটিকে ন্যূনতম হলেও সমর্থন করে।
তবে ডেঙ্গু একটি মারাত্মক সংক্রমণ। এটি নিরাময়ের জন্য প্রচলিত এসব চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ না করে বরং রোগীকে অবিলম্বে হাসপাতালে নিতে হবে। সময়মতো ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগী দ্রুত সুস্থ হয়।
ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
>> তীব্র মাথাব্যথা
>> চোখের পেছনে ব্যথা
>> পেশি ও জয়েন্টে ব্যথা
>> বমি বমি ভাব ও বমি
>> গ্রন্থি ফুলে যাওয়া
>> ফুসকুড়ি
>> বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তপাত
>> তরল জমা
>> শ্বাসকষ্ট
>> গুরুতর রক্তপাত
>> তীব্র পেটে ব্যথা
>> বারবার বমি
>> দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস
>> মাড়ি বা নাক থেকে রক্তপাত
>> ক্লান্তি
>> অস্থিরতা
>> লিভারের বৃদ্ধি
>> বমি বা মলের সঙ্গে রক্তপাত।
ডেঙ্গুর এসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া