রোববার (১৫ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। সার্কুলারটি দেশের সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়।
জানা যায়, ঋণ নিয়ে শর্ত অনুযায়ী ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা হচ্ছে। এরপরেও অনাপত্তি দিচ্ছে না অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ঋণটি সম্পূর্ণ পরিশোধ হয়নি বলে জানানো হচ্ছে। অতিরিক্ত সুদ ও চার্জ নেওয়ায় এমন সব ঘটনা ঘটছে। এতে করে বিপাকে পড়ছেন সাধারণ গ্রাহক।
এমন পরিস্থিতিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ফি, চার্জ বা কমিশনের বিষয়ে নতুন এই নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে বিনা নোটিশে অতিরিক্ত সুদ নেওয়া যাবে না। অতিরিক্ত সুদহার আরোপ করার এক মাস আগে গ্রাহককে জানাতে হবে। মেয়াদের আগে ঋণ পরিশোধে ১ শতাংশ অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে। তবে সুদহার বাড়ানোর কারণে যদি কোনো গ্রাহক চুক্তি সমাপ্তি করতে চান তাহলে কোনো মেয়াদপূর্তি পূর্ব পরিশোধ ফি আদায় করা যাবে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ বা লিজের সুদে হার বাড়াতে হলে যৌক্তিক কারণ জানিয়ে গ্রাহককে এক মাস আগে নোটিশ দিতে হবে। এছাড়া তা সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তবে কোনো মেয়াদপূর্তি পূর্ব পরিশোধ ফি আদায় করা যাবে না বলেও নির্দেশনায় জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সম্প্রতি সময়ে কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ম অনুযায়ী সুদ ও মুনাফার হার পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে গ্রাহকের নোটিশ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করছে না। তাছাড়া প্রায়শই পরিলক্ষিত হচ্ছে যে, ঋণচুক্তির তফসিল মোতাবেক সর্বশেষ কিস্তি পরিশোধের পর গ্রাহক জানতে পারছেন তার ঋণটি সম্পূর্ণ পরিশোধ বা সমন্বয় হয়নি। প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সুদ বা মুনাফার হার পরিবর্তনের কারণে গ্রাহককে অতিরিক্ত কিস্তি বা ঋণের দায় পরিশোধ করতে হবে। এতে গ্রাহক বিভ্রান্ত হচ্ছেন এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে এরূপ অভিযোগ নিষ্পত্তিতে ব্যর্থ হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের দারস্থ হচ্ছেন, যা অনভিপ্রেত। এছাড়াও বিদ্যমান মেয়াদপূর্তি পূর্ব পরিশোধ ফি এর হার যৌক্তিকীকরণের প্রয়োজনীয়তা পরিলক্ষিত হয়েছে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, সুদ বা মুনাফার হার বৃদ্ধির ফলে যদি কোনো গ্রাহক সুদ বা মুনাফা বাড়ানোর তারিখ থেকে এক মাসের মধ্যে কোনো ঋণ বা বিনিয়োগের অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে চুক্তির পরিসমাপ্তি ঘটাতে চান তাহলে বকেয়া স্থিতির ওপর সর্বোচ্চ ১ শতাংশ হারে মেয়াদপূর্তি পূর্ব পরিশোধ ফি আদায় করা যাবে। তবে কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র (সিএমএস) উদ্যোগ খাতে প্রদত্ত ঋণ মেয়াদপূর্তি পূর্ব সমন্বয়ের ক্ষেত্রে এরূপ ফি আদায় করা যাবে না।
গ্রাহকের সঙ্গে ঋণচুক্তির আওতায় সুদ বা মুনাফার হার পরিবর্তনের যৌক্তিকতা উল্লেখপূর্বক ন্যূনতম এক মাস পূর্বে ঋণের নথিতে সংরক্ষিত সর্বশেষ হালনাগাদ যোগাযোগের ঠিকানায় রেজিস্টার্ড ডাকযোগে গ্রাহককে নোটিশ প্রদান করতে হবে। এছাড়া গ্রাহকের নোটিশ পাওয়ার প্রমাণ ঋণ নথিতে তালিকাভুক্ত করতে হবে। ঋণচুক্তির আওতায় সুদহার কমানো ও বাড়ানোর ক্ষেত্রে সংকুচিত বা অতিরিক্ত অর্থ পরবর্তী কিস্তির সঙ্গে সমহারে সমন্বয় করতে হবে। একইসঙ্গে গ্রাহককে নতুন পরিশোধসূচি দিতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, সুদ বা মুনাফার হার কমানো বা বাড়ানোর কারণে যদি কোনো গ্রাহক সুদ বা মুনাফার হার পুনর্নির্ধারণের তারিখ থেকে এক মাসের মধ্যে কোনো ঋণের অর্থ সম্পূর্ণ পরিশোধের মাধ্যমে চুক্তির পরিসমাপ্তি ঘটাতে চান, সেক্ষেত্রে কোনো মেয়াদপূর্তি পূর্ব পরিশোধ ফি আদায় করা যাবে না।