বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে পাঁচটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ এ কথা জানান।
কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন। এ বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কেউ যদি দুই বছরের বেশি শাস্তিপ্রাপ্ত হন তিনি নির্বাচন করতে পারেন না। খালেদা জিয়া দুই বছরের অনেক বেশি দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। তার তো নির্বাচন করার প্রশ্নই আসে না।’
তিনি বলেন, ‘তাকে (খালেদা জিয়া) শর্তসাপেক্ষে ঘরে থাকার অনুমতি দিয়েছে তার স্বাস্থ্য বিবেচনায়। তার শারীরিক অবস্থা এবং বয়স বিবেচনায় তাকে শর্তসাপেক্ষে কারাগারের বাইরে ঘরে অবস্থান করার অনুমতি দিয়েছে। সেই শর্ত অনুযায়ী তিনি রাজনীতিও করতে পারেন না।’
‘শর্তের মধ্যে তিনি রাজনীতি করতে পারবেন সেটি নেই। শর্তে বলা হয়েছে, তিনি ঘরে থেকে চিকিৎসা নেবেন। অন্য কোনো কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করবেন না, সেটি বলা আছে। সুতরাং তার রাজনীতি করতে পারারও কথা নয়।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যদি বলে থাকেন সেটা বলতে পারেন। যতদূর আইন-কানুন জানি ও বুঝি, আমি ইতোমধ্যে খোঁজ-খবর নিয়েছি।’
আইনমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রী দুজনই বলেছেন, রাজনীতি করতে বাধা নেই- এ বিষয়ে ফের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আইনমন্ত্রী রাজনীতি করতে পারবেন সেটি বলেননি, আমি খোঁজ নিলাম। আইনমন্ত্রীর বক্তব্য ভিন্নভাবে কোনো কোনো গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। অন্যরা কে কী বলেছেন আমি জানি না।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবে বলছি, যে শর্তে তাকে (খালেদা জিয়া) ঘরে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে সেই শর্ত অনুযায়ী তিনি রাজনীতি করতে পারার কথা নয়।’
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। দুটি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া কারাবন্দি ছিলেন। নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত।
একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন একই আদালত। রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।