গত সপ্তাহে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নাইট ফ্রাংক প্রকাশিত দ্য ওয়েলথ রিপোর্টে দেখা গেছে, ইউরোপের অতিধনীরা রয়েছেন এ সংকটের কেন্দ্রে। এদের প্রত্যেকেই গড়ে ১৭ শতাংশ করে সম্পদ খুইয়েছেন। এক্ষেত্রে অতিধনী হিসেবে তাদেরই চিহ্নিত করা হয়েছে যাদের নেট সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ডলারের বেশি এবং যারা নিজেদের বসবাসের বাড়িকে বিনিয়োগ হিসেবে দেখান না।
নাইট ফ্রাংকের গ্লোবাল হেড অব রিসার্চ লিয়াম বেইলি বলেন, ‘গত বছর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পর্যুদস্ত হয় ইউরোপের জ্বালানি পরিস্থিতি। সেই সঙ্গে বাড়ে মূল্যস্ফীতি। এ অবস্থা মোকাবেলায় বিশ্বের প্রায় সব দেশেই সুদের হার বাড়ানো হয় রেকর্ড পরিমাণে। ফলে অর্থনীতিতে তীব্র হয় মূল্যস্ফীতির প্রভাব।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ত্বরান্বিত হয়েছে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, বেড়েছে মূল্যস্ফীতি ও নিত্যপণ্যের দাম। যার কারণে সংকটে পড়েছে বিশ্ববাজার। মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছে। ফেডারেল রিজার্ভ ২০২২ সালের মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বেঞ্চমার্ক হার আট দফা বাড়িয়েছে। ৪০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চে ওঠা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
এ অবস্থায়ও গত বছর ৪০ শতাংশ অতিধনীর সম্পদ বেড়েছে। গত বছর অর্থনীতির যে অবস্থা ছিল তা বিশ্বের কিছু অতিধনীর জন্য ছিল নেতিবাচক। মূলত আবাসিক ও বাণিজ্যিক সম্পদের মূল্য নির্ধারণ নীতিতে কিছু পরিবর্তন আসা, আয় নির্দিষ্ট হয়ে যাওয়াসহ বেশকিছু বিষয় প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। নাইট ফ্রাংক বলছে, সম্পদ কমে যাওয়ার বিষয়টি আশ্চর্যজনক নয়। মুদ্রানীতিতে নাটকীয় পরিবর্তন আসায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত বছর ইউরোপের ধনীরা সবচেয়ে বেশি পতন দেখেছেন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার অতিধনীদের সম্পদের পরিমাণ গড়ে কমেছে ১১ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১০ শতাংশ। আফ্রিকায় সবচেয়ে কম কমেছে, শতাংশের হিসেবে তা ৫ এবং একই সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের অতিধনীদের সম্পদের পরিমাণ গড়ে কমেছে ৭ শতাংশ।
নাইট ফ্রাংকের চালানো জরিপে অংশ নেয়া ৬৯ শতাংশ ধনী বিনিয়োগকারী সফলভাবে বছর পার করবেন বলে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, সম্পদের মূল্য বাড়তে শুরু করার পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা নিজেদের অবস্থান শক্ত করে নেবেন। প্রায় ২৫ শতাংশ ধনী বলছেন, তাদের মূল লক্ষ্য ২০২৩ সালে সম্পদ সুরক্ষিত রাখা।