ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় ২০২২ সালে জ্বালানি তেলের দাম ছিল ঊর্ধ্বমুখী। এতে ফুলেফেঁপে উঠেছে জ্বালানি কোম্পানিগুলোর আয়। ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত আয়-ব্যয়ের উপাত্তে এক্সন মবিল, শেভরন, শেল ও বিপি জানিয়েছে, গত বছর রেকর্ড আয় করেছে তারা। এবার এ তালিকায় যুক্ত হল সৌদি আরামকো।
এক বিবৃতিতে সৌদি আরামকোর শীর্ষ নির্বাহী আমিন নাসের বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতেও জ্বালানি তেল ও গ্যাসের বাজার গুরুত্বপূর্ণ থাকবে। কিন্তু এ খাতের কম বিনিয়োগের ঝুঁকি রয়েই যাচ্ছে, যা উচ্চজ্বালানি মূল্যবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।’
এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শুধু তেল, গ্যাস ও রাসায়নিক উত্তোলনেই মনোযোগী হলে চলবে না। কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারে, এমন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করতে হবে বলে মনে করেন নাসের।
২০২২ সালে আরামকোর মূলধন ব্যয় ১৮ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৭৬০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। চলতি বছরে এ ব্যয় সাড়ে ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার কোটি ডলার হবে বলে আশা করছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কোম্পানিটি।
গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে ১ হাজার ৯৫০ কোটি ডলার লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে সৌদি আরামকো, যা পূর্ববর্তী প্রান্তিকের চেয়ে ৪ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর কোম্পানির নগদ অর্থ প্রবাহ হয়েছে ১৪ হাজার ৮৫০ কোটি ডলার, যা ২০২১ সালের ১০ হাজার ৭৫০ কোটি ডলারের চেয়ে বেশি।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার-ইউক্রেন আগ্রাসনের পর মার্চ থেকেই বাড়তে থাকে জ্বালানি তেলের দাম। আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ অপরিশোধিত ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৩৯ ডলার ১৩ সেন্টে দাঁড়িয়েছে, যা ২০০৮ সালের পর সর্বোচ্চ। অবশ্য বছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই জ্বালানি তেলের দাম কমতে থাকে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত বছর সুদহার বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়। এতে মন্দার শঙ্কা জেঁকে বসায় ২০২২ সালের দ্বিতীয়ার্ধে জ্বালানি তেলের দাম কমতে শুরু করেছিল।
২০২১ সালেও সৌদি আরামকোর মুনাফা বেড়েছিল ১২৪ শতাংশ। মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে ওই বছরে কোম্পানিটির নিট আয় হয়েছিল ৪১ হাজার ২০০ কোটি সৌদি রিয়াল বা ১১ হাজার কোটি ডলার।
২০২২ সালে বাজারমূল্যের দিক থেকে অ্যাপলকে হটিয়ে বিশ্বের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে সৌদি আরামকো।
অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ফলে বিনিয়োগকারীরা জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। এতে বেড়ে গেছে সৌদি আরামকোর শেয়ারদরও।