বিসিবি সভাপতি একা নন, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ বিজয়ের চিন্তা করেননি অতিবড় বাংলাদেশ ভক্তও। কিন্তু টাইগাররা সবার চিন্তা ছাপিয়ে, ভাল খেলে যোগ্য দল হিসেবেই প্রথম ২ ম্যাচ জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে।
এখন শেষ ম্যাচটির সে অর্থে গুরুত্ব ও আবেদন কমে গেছে। শেষ ম্যাচটি এখন দুই দলের কাছে দুই রকম আবেদন নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের কাছে আজ (মঙ্গলবার) তৃতীয় ও শেষ টি টোয়েন্টি ম্যাচট হলো ইংলিশদেরকে ‘বাংলাওয়াশের’ ম্যাচ।
সাকিবের দল জিতলেই জস বাটলারের দল হবে ধবলধোলাই। আর ইংলিশদের কাছে এ ম্যাচ ‘বাংলাওয়াশ’ এড়ানোর লড়াই। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের তকমা গায়ে বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাওয়াশ এড়ানোর ম্যাচ। এখন দেখা যাক আজ বিকেলে শেরে বাংলায় কি হয়, বাংলাওয়াশ নাকি বাংলাওয়াশ এড়ানো?
খেলা না দেখা যে কেউ হয়তো ভাবছেন, বাংলাদেশতো ঘরের মাঠে স্লো-লো আর টার্নিং ট্র্যাকে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডকেও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সিরিজ হারিয়েছে ।
তারওপর রোববার অফস্পিনার মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা (৪/১৪) বোলিংয়ের কথা শুনে হয়ত মনে মনে ভাবছেন, ওহ তাহলে স্পিন ট্র্যাকেই বুঝি ইংলিশ বধ করলো সাকিবের দল! আসলে কিন্তু তা নয়। ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়া (৪-১) আর নিউজিল্যান্ডকে (৩-২) বাংলাদেশ হারিয়েছিল একদম স্লো, লো আর টার্নিং পিচে।
তবে এবারের উইকেট আগের মত অত স্লো, লো আর টার্নিং ছিল না। রোববার মিরপুরের শেরে বাংলার পিচে বল একটু দেরিতে ব্যাটে আসলেও অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে উইকেটের মত অত স্লো, লো আর টার্নিং ছিল না। আর চট্টগ্রামের পিচ তো বেশ ভালোই ছিল। সেখানে জস বাটলারের দলকে ১৫৬ রানে থামিয়ে ৬ উইকেটে জিতেছে টাইগাররা। সেটা নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্য দিয়ে। অনুকুল উইকেটকে কাজে লাগিয়ে নয়।
কাজেই এবার আর উইকেটের সুবিধা কাজে লাগিয়ে নয়, মাঠে সেরা ক্রিকেট খেলেই সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। ইংলিশ ক্যাপ্টেন জস বাটলার এরমধ্যে এমনটাই বলেছেন। দ্বিতীয় ম্যাচে ১১৭ রানে অলআউট হওয়ার পর উইকেটের দোষ না দিয়ে বরং বাংলাদেশের বোলিংকে ‘আউটস্ট্যান্ডিং’ আখ্যা দিয়েছেন বাটলার।
আগের ২ ম্যাচের চালচিত্র খেয়াল করলেই পরিষ্কার হবে, দুই খেলাতেই বোলাররা জয়ের মঞ্চ সাজিয়েছেন। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ একদম শেষ দিকে ১৭ আর ১৯ ওভারে অধিনায়ক জস বাটলারের উইকেট সহ ২ জনকে আউট করে এবং শেষ ২ ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে ইংলিশ স্কোরকে ১৫০‘র ঘরে আটকে রাখেন। না হয় সেটা ১৭০ ছাড়িয়ে যেতে পারতো। আর দ্বিতীয় ম্যাচে মিরাজের মাপা অফস্পিনেই দিশেহারা হয়েছে বাটলার বাহিনী।
মোটকথা, বোলারদের সুনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের ওপর ভর করেই সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। আজ মঙ্গলবার শেষ ম্যাচেও টাইগারদের সাফল্য-ব্যর্থতা নির্ভর করবে বোলারদের ওপর। বোলাররা আগের দুই ম্যাচের মত জায়গামত বল ফেলতে পারলে ইংলিশদের আরও একবার পর্যুদস্ত করা সম্ভব হবে।
সাকিব, মিরাজ, মোস্তাফিজ আর হাসান মাহমুদরা কি পারবেন তা করে দেখিয়ে ইংলিশদের বাংলাওয়াশ করতে?