সাধারণত ইউরোপ ও এশিয়ার শহরগুলোই গণপরিবহনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিশ্বের সেরা শহরগুলোর তালিকায় থাকে। এবার এই তালিকার সর্বপ্রথমে আছে জার্মানির রাজধানী বার্লিন; দ্বিতীয় স্থানে আছে চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগ। এ তালিকায় ১৯তম অবস্থানে আছে ভারতের মুম্বাই। খবর সিএনএন এর।
সম্প্রতি বিশ্বের ৫০টি শহরের ২০ হাজার নাগরিকের মতামত নিয়ে গণপরিবহন ব্যবস্থায় সেরা শহরগুলোর তালিকা তৈরি করেছে টাইম আউট ম্যাগাজিন। গণপরিবহনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে তারা কতটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।
পোলে দেওয়া মতামতের ভিত্তিতে ৫০টি শহরের মধ্য থেকে ১৯টি বাছাই করা হয়েছে।
১৯ টি শহরের মধ্যে সেরা ১০ এ থাকা শহরগুলোর সবগুলোই এশিয়া ও ইউরোপে অবস্থিত। অন্যদিকে উত্তর আমেরিকা থেকে সবচেয়ে এগিয়ে আছে নিউইয়র্ক; তালিকায় শহরটির অবস্থান ১৫ নম্বরে। তবে, দোহা ও মেলবোর্নের মতো বিখ্যাত শহরগুলো এ তালিকায় জায়গা করতে পারেনি।
উন্নত গণপরিবহনের তালিকায় থাকা ১৯টি শহরের মধ্যে মোট ৭টি শহরই এশিয়ার। এক্ষেত্রে তালিকায় সিঙ্গাপুর, সাংহাই ও তাইপে- এর মতো পূর্ব এশিয়ার শহরগুলো বেশি।
তালিকাটি শুধু শহরে বসবাসকারী নাগরিকদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। তবে পর্যটকদের ভ্রমণের ক্ষেত্রেও শহরগুলোর এই তালিকাটি সহায়ক হতে পারে।
গণপরিবহনের মধ্যে সাবওয়ে, বাস, ট্রাম, ট্রেন এমনকি ফেরিও বিবেচনা করা হয়। এক্ষেত্রে টাইম আউটের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বার্লিন থেকে অংশ নেওয়া নাগরিকদের ৯৭ ভাগই তাদের শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
তবে ট্রেন ও বাসের মতো গণপরিবহনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে প্রথাগত সুযোগ-সুবিধা ছাড়াও বর্তমানে নান্দনিকতার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। তালিকায় ৭ নম্বরে থাকা সুইডেনের রাজধানী স্টকহোম এক্ষেত্রে বড় উদাহরণ। শহরটির সাবওয়ে স্টেশনগুলো নান্দনিকভাবে সাজানো; বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রঙ-বেরঙের নকশায় সুসজ্জিত।
একইসাথে হংকং এ 'ডিং ডিংস' নামের ট্রেনগুলোতেও নানা রকম নান্দনিক নকশা করা হয়। প্যান্টন রঙে নিজস্ব 'এইচকে ট্রাম গ্রিন' কালার কোডে করা এই শৈল্পিক ডিজাইনগুলো খুবই আকর্ষণীয়।
তালিকায় ১৯ নম্বরে থাকা মুম্বাইয়ে সম্প্রতি গণপরিবহনে যাতায়াত ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে 'চালো পে' নামের অ্যাপ সার্ভিস চালু হয়েছে। এ অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিকরা নগদ টাকার ঝামেলা এড়িয়ে খুব সহজেই ডিজিটাল পেমেন্টে টিকেট কিনতে পারেন।
এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে টোকিও; তালিকায় শহরটির অবস্থান ৩ নম্বরে। টোকিওর গণপরিবহন খুবই সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয়। এমনকি জাপানিজ ভাষা না জানা একজন ব্যক্তিও শহরটিতে গণপরিবহন ব্যবহার করে স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারবেন।
তালিকায় ইউরোপ থেকে জায়গা করে নিয়েছে মোট ৬টি শহর। এরমধ্যে যুক্তরাজ্য থেকে রয়েছে দুটি শহর; লন্ডন ও এডিনবার্গ।
গণপরিবহনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে টাইম আউট ম্যাগাজিনের বিশ্বের সেরা ১৯ শহর:
১. বার্লিন, জার্মানি
২. প্রাগ, চেক রিপাবলিক
৩. টোকিও, জাপান
৪. কোপেনহেগেন, ডেনমার্ক
৫. স্টকহোম, সুইডেন
৬. সিঙ্গাপুর
৭. হংকং
৮. তাইপে, তাইওয়ান
৯. সাংহাই, চীন
১০. আমস্টারডাম, নেদারল্যান্ডস
১১. লন্ডন, যুক্তরাজ্য
১২. মাদ্রিদ, স্পেন
১৩. এডিনবার্গ, যুক্তরাজ্য
১৪. প্যারিস, ফ্রান্স
১৫. নিউ ইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র
১৬. মন্ট্রিয়াল, কানাডা
১৭. শিকাগো, যুক্তরাষ্ট্র
১৮. বেইজিং, চীন
১৯. মুম্বাই, ভারত