রেফিনিটিভ অয়েল রিসার্চের প্রতিবেদন অনুসারে, ফেব্রুয়ারিতে জ্বালানি তেলের মোট আমদানি ছিল ১১ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার টন। দৈনিক ভিত্তিতে মার্চে ৬ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে আমদানি। ফেব্রুয়ারিতে দৈনিক ভিত্তিতে যার পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৯৪ লাখ ব্যারেল। বিপরীতে জানুয়ারিতে দৈনিক ভিত্তিতে উৎপাদন ছিল ২ কোটি ৯১ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল।
২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকের আমদানি ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে। মার্চে দৈনিক আমদানি সূচক তুলনামূলক কম হলেও এশিয়ার জ্বালানি তেল আমদানিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনাকে ইঙ্গিত করে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেই আমদানি দৈনিক ভিত্তিতে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেলে পৌঁছেছে। গত বছরের শেষ প্রান্তিকের চেয়ে যা ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। ২০২২ সালে দৈনিক ভিত্তিতে আমদানি ছিল ২ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল।
চীনে মার্চের আমদানি ছিল গত চার মাসের তুলনায় সর্বোচ্চ। ৪ কোটি ৯২ লাখ ৬০ হাজার টন, যা দৈনিক ১ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল। ফেব্রুয়ারিতে এর পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে ১০ লাখ ব্যারেল বেশি আমদানি হয়েছে।
গত বছরের শেষ দিকে চীন নভেল করোনাভাইরাস-পরবর্তী নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়। গতি পায় অর্থনৈতিক কার্যক্রম, যা প্রভাব ফেলেছে আন্তর্জাতিক বাজারে। উল্লেখ্য, তেলের আমদানিতে শীর্ষ দেশ চীন। সৌদি আরব চীনের শীর্ষ সরবরাহকারী দেশ। দেশটির চীনে জ্বালানি তেল সরবরাহের পরিমাণ ৮০ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল, যা চীনের মোট আমদানির ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
অন্যদিকে রাশিয়ার সরবরাহকৃত জ্বালানি তেলের পরিমাণ ৭৯ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল, যা চীনের মোট আমদানীকৃত জ্বালানি তেলের ১৬ দশমিক ১ শতাংশ। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে চীনের জ্বালানি তেলের বাজারে প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে সৌদি আরব ও রাশিয়া। বিশেষ করে এশিয়ার দেশগুলোয় রাশিয়া বিশেষ ছাড়ে তেল সরবরাহ করতে শুরু করেছে।
রাশিয়ার জ্বালানি তেলের সহজলভ্যতা ভারতকেও রাশিয়ামুখী করেছে। তবে জ্বালানি তেলের ইউরাল গ্রেড আসে ভারতে। মার্চে ভারত চার লাখ টন ইউরাল গ্রেড জ্বালানি তেল কিনেছে। চীনের আমদানি করা ইউরাল গ্রেড জ্বালানি তেল ১৫ লাখ ৬০ হাজার টন। ভারতের জ্বালানি তেলের আমদানি গত ১১ মাসে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। মার্চে আমদানি ছিল ১ কোটি ১২ লাখ ৩০ হাজার টন বা দৈনিক ৫০ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল। যার ৩৪ শতাংশ এসেছে রাশিয়ার কাছ থেকে। মোট পরিমাণ ৭২ লাখ ৯০ হাজার টন। ধারাবাহিকভাবে ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। সার্বিক জ্বালানি তেল আমদানি বাড়ছে। এদিকে এশিয়ার তৃতীয় বৃহৎ আমদানিকারক দেশ জাপান ১ কোটি ৬৭ হাজার টন জ্বালানি তেল আমদানি করেছে মার্চে। দৈনিক হারে ২৫ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল। ২০২২ সালের জুনের পর এটি সর্বনিম্ন। জাপানে বর্তমানে চাহিদা কিছুটা কমে এসেছে। পরিশোধনকারীরাও উচ্চমূল্যের কারণে উদ্বিগ্ন। দক্ষিণ কোরিয়ার দৈনিক আমদানি ৩৩ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে দাঁড়িয়েছে। আমদানি বেড়েছে সিঙ্গাপুরেও।
অর্থসংবাদ/এসএম