বন্দনা শিবা একজন ভারতীয় শিক্ষাবিদ, পরিবেশবাদী, খাদ্য সার্বভৌমত্বের প্রবক্তা। তিনি ২০টিরও অধিক বই লিখেছেন। সেই বন্দনা শিবা বেশ কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বিল গেটস কিছুই আবিষ্কার করেননি।
২০১৯ সালে ডেমোক্রেসি নাউ-এর এমি গুডম্যানের মুখোমুখি হয়ে বন্দনা শিবা আরো বলেছিলেন, বিল গেটসের মানবপ্রেমিক চেহারার আড়ালেও আছে পুঁজি। ধনী এই মানুষটি এমন সব জায়গায় দানের অর্থ বিলান যেখানে আখেরে বাণিজ্য করা যাবে।
বন্দনা শিবা সেদিন বলেন, সবাই জানে, আমার বইয়েও (‘ওয়াননেস ভার্সেস দি ওয়ান পারসেন্ট’) আছে যে, বিল গেটস কিছুই আবিষ্কার করেননি। বেসিক (BASIC) প্রোগ্রামটি একটি কলেজের গণিতের কিছু অধ্যাপক দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। মাইক্রোসফট অফিস অপারেটিং সিস্টেমটি বানিয়েছিলেন একজন সফ্টওয়্যার প্রকৌশলী। বিল গেটস এটি ৫০ হাজার ডলার দিয়ে কিনে নিলেন। এরপর সফ্টওয়্যারটির পেটেন্ট নিজের করে নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন একটি সাম্রাজ্য।
বন্দনা শিবা বলেন, এরপর সিঙ্গাপুরে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) প্রথম বৈঠকে তথ্য-প্রযুক্তিকে প্রণোদনা দেওয়ার নামে বিল গেটসকে কর ছাড় দেওয়া হয়। এর ফলে সমস্ত আইটি শিল্প ভারতে চলে যায়।
এরপরই সিলিকন ভ্যালি, ভারত হয়ে যায় সিলিকন ভ্যালি- এ মন্তব্য করে বন্দনা শিবা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যে কাজ করা হতো তা ভারতে করা হলো। এভাবে একই কাজের জন্য কম মজুরি দিয়ে বছরে ৪০ বিলিয়ন ডলার বাঁচিয়ে ফেলে। আর এটি সম্ভব হয় সফটওয়্যারের আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে। এ সবই করা হয়েছে একান্তভাবে বিল গেটসের স্বার্থে।
বন্দনা শিবা বলেন, এভাবে বিশাল অর্থ হাতিয়ে নিয়ে এবং প্রকৃত মুদ্রায় যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অবৈধ করে ডিজিটাল অর্থব্যবস্থায় বাধ্য করা- এই সবকিছুতে তিনি একা লাভবান হন। ডিজিটাল অর্থনীতি, সফ্টওয়্যার সেবা এবং রয়্যালটি এ সবকিছুর লাভ যায় বিল গেটসের অ্যাকাউন্টে। এরপর তিনি সে অর্থ সামনে এনে হয়ে ওঠেন মানবদরদি। আর সবাই মনে করতে বাহ! বিল গেটস অনেক বড় মনের মানুষ। তিনি অনেক কিছু দেন।
বিষয়টি নিজের নতুন গ্রন্থ ‘ওয়াননেস ভার্সেস দি ওয়ান পারসেন্ট’-এ এসেছে উল্লেখ করে বন্দনা শিবা বলেন, ‘আমার বইয়েও বিষয়টি বিশ্লেষণ করেছি। আসলে বিল গেটস এমন সব জায়গায় দান করেন যেখানে ভবিষ্যতে বাণিজ্য করা যাবে।’