জরিপে দেখা গেছে, ব্যবসায়িক পরিস্থিতির সূচক ঋণাত্মক দিকে ঝুঁকে পড়েছে। কমে গেছে ক্রয়াদেশ, চাহিদাসূচক ও মে মাসের নতুন চুক্তির হার। ফলে আগামী মাসগুলোয় ব্যবসায়িক কার্যক্রম সচল থাকা নিয়ে দেখা দিয়েছে আশঙ্কা।
এনএবির প্রধান অর্থনীতিবিদ অ্যালান অস্টার দাবি করেছেন, পরিস্থিতি নাগালের মধ্যে রাখতে আরবিএর প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়। আগামী মাসগুলোর ব্যবসায়িক প্রবণতা এক্ষেত্রে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আরবিএ অন্তত বিচার করতে পারবে, তার গৃহীত নীতিমালা যথেষ্ট কিনা। অন্তত যদি সময়মতো মূল্যস্ফীতি নাগালের মধ্যে রাখা সম্ভব হয়। জরিপে পণ্যের দামের ওপর একটা বাড়তি চাপের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। শ্রমব্যয় ও পণ্যের ক্রয় বাবদ বেড়ে যাচ্ছে ব্যয়। এদিকে ২০২২ সালের মে মাস থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে চলছে। বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ১ শতাংশ, যা গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে হয়তো, আরো বাড়তে পারে মূল্যস্ফীতি। বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৪ দশমিক ৬ শতাংশে।
চলতি বছরের জন্য দেয়া অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল, বর্তমানে তা দশমিক ৫ শতাংশ। এদিকে ২০২৪ সালে চাকরি হারানোর হারের প্রাক্কলন ৩ দশমিক ৭ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। বাজার এখন অন্তত মূল্যস্ফীতির দুটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে ২০২৩ সালের পরবর্তী দিনগুলোয় প্রতিবন্ধকতাগুলো কাটানো বেশি কঠিন হবে না। ওয়েস্টপ্যাক ও কমনওয়েলথ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়া (সিবিএ) জানিয়েছে, ভোক্তারা এখন জীবনযাপনের উচ্চব্যয়কে পুষিয়ে নিতে চাচ্ছেন। বাসা ভাড়া ও অন্যান্য খাতে খরচ কমিয়ে আনতে আগ্রহী। ওয়েস্টপ্যাক-মেলবোর্ন ইনস্টিটিউট জরিপে ভোক্তা সূচক জুনে দশমিক ২ শতাংশ উত্তীর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯ দশমিক ২-তে। কিন্তু ৬ জুনের আরবিএ মূল্যস্ফীতির ঘটনার আগে ও পরের চিত্র এক রকম নয়। আগে ছিল ৮৯ পয়েন্ট, যা ৬ জুনের পরে দাঁড়িয়েছে ৭২ দশমিক ৬ পয়েন্টে। পারিবারিক ব্যয় ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সংকুচিত হয়ে যথাক্রমে ২ দশমিক ১ ও দশমিক ১ শতাংশে ঠেকেছে। যদিও মৌসুমটা নতুন গৃহস্থালি সামগ্রী ক্রয়ে ইচ্ছুকদের জন্য সামান্য অনুকূলে ছিল। তার পরও মূল্যস্ফীতি কমে ৫ দশমিক ৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে জুনে।
ওয়েস্টপ্যাকের অর্থনৈতিক প্রধান বিল ইভান্স মনে করেন, চাকরির বাজারেও পরিস্থিতি নেতিবাচক দিকে ঘুরে যাচ্ছে। তার প্রধান কারণ, চাকরি হারানোর ঘটনা অর্থনীতিতে আঘাত করতে পারবে। জরিপে বেকারত্ব বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদিও সাবইনডেক্স ৬ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ১৩১ দশমিক ৩ শতাংশে উত্তীর্ণ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২২ সালের মে মাসের পর যা অনেকটাই দুর্বল অবস্থানে। মানুষ পেট্রল ও গাড়ি পার্কিংয়ের খরচ বাঁচানোর জন্য গণপরিবহন ব্যবহার করছে। ঘরের কাজ করা পিতা-মাতার আরো বেশি শ্রমসাধ্য হবে সন্তান লালন-পালন করতে।