১৯৪৮ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে দেশটি সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মাঝে রয়েছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই পুনর্গঠন পরিকল্পনা ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। এর সঙ্গে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
অক্সফোর্ড ইকোনমিক্সের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ অ্যালেক্স হোমস বলছেন, বর্ধিত সরকারি ছুটির অর্থ হলো, সরকার স্পষ্টতই ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে ঝুঁকি দেখছে।
স্থানীয় মিডিয়াও বিশ্লেষকদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, উল্লেখযোগ্য আর্থিক ঘোষণার সঙ্গে সম্পর্কিত সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়াগুলো সামাল দেয়ার জন্য এ ছুটি।
তবে চলতি সপ্তাহের শুরুতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, এই পুনর্গঠন প্রক্রিয়া ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে পতনের দিকে নিয়ে যাবে না।
গতকাল বিক্রমাসিংহের কার্যালয় জানিয়েছে, মন্ত্রিসভা দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি পুনর্গঠন প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। পরিকল্পনাটি সপ্তাহের শেষ দিকে সংসদে উঠবে।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান নন্দলাল বীরাসিংহে বলেন, সরকার আশা করছে যে এই পাঁচদিন বাজার বন্ধ থাকাকালে পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হবে।
আরো জানান, আমানতের সুরক্ষার বিষয়ে স্থানীয় আমানতকারীদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। তাদের স্বার্থ প্রভাবিত হবে না।
দেশটি যখন সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার সংগ্রাম করছে তখনই অভ্যন্তরীণ ঋণ পুনর্গঠনের পদক্ষেপটি এল।
শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতা-পরবর্তী ইতিহাসে গত বছর প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের কাছে খেলাপি হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক মাসে একাধিক দেশ ও সংস্থা নতুন ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৩০০ কোটি ডলারের বেলআউট প্যাকেজ অনুসরণ করে বিশ্বব্যাংক ৭০ কোটি ডলার মঞ্জুর করেছে। বিশ্বব্যাংক এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা পর্যায়ক্রমে সহায়তা দেবে।
চীন ও ভারতসহ প্রধান ঋণদাতাদের কাছ থেকে অর্থায়নের আশ্বাস এই বেলআউটের পথ প্রশস্ত করেছে। আইএমএফ এ পর্যন্ত প্রায় ৩৩ কোটি ডলার তহবিল ছেড়েছে।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বছরের শুরুর দিকে দেশের অর্থনৈতিক সংকটের রূপরেখা প্রকাশ করেছে। এর সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, বেশ কিছু অন্তর্নিহিত দুর্বলতা ও নীতিগত ত্রুটির কারণে গুরুতর অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে পড়েছে দেশটি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি এই বছর ২ শতাংশ সংকুচিত হলেও আগামী বছর ৩ দশমিক ৩ শতাংশ সম্প্রসারিত হবে। তবে আইএমএফ এতটা আশাবাদী নয়। সংস্থাটি আগামী বছরের জন্য ১ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে।