তীব্র ডলার সংকটে পড়েছে আর্জেন্টিনা। তাই বিকল্প হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে চীনা মুদ্রা ইউয়ানে সঞ্চয়ী হিসাব খোলার অনুমতি দিয়েছে দেশটির সরকার।
ইউয়ানে সঞ্চয়ী ও চেক অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি দিয়ে গত বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আর্জেন্টিনার কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এই সংকটকালে চীনা মুদ্রা ইউয়ান দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।
বিশ্বের অনেক দেশের মতো আর্জেন্টিনায়ও মার্কিন ডলারে ব্যাংক হিসাব খোলার অনুমতি আছে। ডলারের তীব্র সংকটে ইউয়ানের ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে দেশটি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বুয়েনস আইরেস টাইমস জানায়, গত এপ্রিলে চীন থেকে আমদানির দায় ইউয়ানে শোধ করা শুরু হয়। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ২৭০ কোটি ডলারের দায়ের একটা অংশ ইউয়ানের মাধ্যমে পরিশোধ করেছে আর্জেন্টিনা।
গত ২৩ জুন ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ডলারের বিকল্প মুদ্রা হিসেবে ইউয়ানের দিকে ঝুঁকছে আর্জেন্টিনা। কারণ, ২০১৬ সাল থেকে দেশটির ডলারের রিজার্ভ তলানিতে রয়েছে। খরার কারণে দেশের কৃষি উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রপ্তানি ব্যাপক কমেছে। এ কারণেই দেশটিতে ডলারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বড় বাধা তৈরি হয়েছে।
তার ওপর এ বছর ডলারের বিপরীতে আর্জেন্টাইন পেসোর দাম ৩০ শতাংশ কমেছে। ডলার কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে। ২০২০ সালের আর্জেন্টিনার পেসো প্রায় ৮০ শতাংশ দর হারিয়েছে। এমন পরিস্থিতিই ইউয়ানের জন্য মোক্ষম সুযোগ এনেছে, যা বেইজিং আন্তর্জাতিকীকরণের চেষ্টা করছে।
দীর্ঘদিন ধরে চীন ইউয়ানের বৈশ্বিক প্রচলন বাড়ানোর চেষ্টা করছে। গত বছর রাশিয়া থেকে তেল কেনার সব খরচ ইউয়ানে পরিশোধ করেছে আর্জেন্টিনা। চীন-রাশিয়া তেল-বাণিজ্য সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে মে মাসে রয়টার্স প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন বলছে, শুধু জুনের প্রথম ১০ দিনে আর্জেন্টিনার মুদ্রাবাজারে প্রায় ২৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার মূল্যের ইউয়ান লেনদেন হয়েছে, যা পুরো মে মাসের দ্বিগুণ। কারণ, ৫০০টির বেশি আর্জেন্টাইন কোম্পানি চীনা মুদ্রায় আমদানি দায় পরিশোধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
ইউয়ানের ব্যবহার বাড়লেও ডলার থেকে সরতে চান না আর্জেন্টিনার অন্যতম শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জাভিয়ের মাইলেই মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আর্জেন্টিনার স্থানীয় মুদ্রা হিসাবে পেসোর পরিবর্তে ডলার ব্যবহারের প্রস্তাব করেছেন।
বিষয়টি সহজে বুঝতে ব্লুমবার্গকে মাইলেই বলেন, ‘পেসো সাহারা মরুভূমিতে গলে যাওয়া বরফের মতো।’
অর্থসংবাদ/এসএম