ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে খাদ্যাভ্যাসে অবশ্যই সতর্কতা জরুরি। শুধু ওষুধ খাওয়ার ক্ষেত্রেই নয় সুস্থ হওয়ার জন্য সবসময় কিছু বিষয় মেনে চলা জরুরি। এ বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নাজমা শাহীন।
প্রাথমিক সময়ে তরল খাবার
ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার প্রথম সময়ে শক্ত খাবার নয় বরং তরল খাবার খাবেন। কারণ শরীর তরল খাবার সহজে গ্রহণ করতে পারে এবং পানিশূন্যতাও দূর হয়।
দ্বিতীয় ধাপে নিরামিষ
ডেঙ্গু রোগী নিরাময়ের দিকে এগুতে থাকলে অবশ্যই তাকে একটু নিরামিষজাতীয় খাবারের দিকে যেতে হবে। সহজে হজমযোগ্য খাবার, যেমন- খিচুড়ি, দই, ভাত, পোরিজ, সেদ্ধ আলু, সেদ্ধ শাকসবজি যেমন পেঁপে, কুমড়ো, সবুজ মটর ইত্যাদি খাওয়ানো শুরু করা যেতে পারে।
শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে
ওরস্যালাইন সবসময় ৫০০ মিলি পানিতে গুলিয়ে পান করবেন। আমরা অনেক সময় সঠিক পরিমাপে গুলাই না। ফলে পানিশূণ্যতা দূরের বদলে আরও বাড়ে। ওরস্যালাইন সবসময় আধলিটার পানিতে গুলিয়ে পান কিরা জরুরি। এছাড়া শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে নরম ডায়েটের পাশাপাশি ফলের রস, স্যুপ এবং ডাবের পানির মতো প্রচুর পরিমাণে তরল পান করা প্রয়োজন।
তৃতীয় ধাপে স্বাভাবিক খাবার
রোগ নিরাময়ের তৃতীয় ধাপটি যখন আসবে তখন রোগীকে আবার সাধারণ খাবারের অভ্যাসে আনা যেতে পারে। পাকা কলা, পাকা পেঁপে, তরমুজ ইত্যাদি খাওয়ান।
প্লাটিলেট বাড়ান
মনে রাখবেন, ডেঙ্গু হলে ইলেকট্রোলাইট ও প্লাটিলেটের ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। সেটা বাড়ানোর জন্য এই পরামর্শ অনুসরণ করতে পারেন:
- শরীরে আয়রন বাড়ানোর জন্য পালংশাক দরকার।
- প্লাটিলেট বাড়াতে ভিটামিন কে দরকার যারজন্য ব্রোকলি, ডালিম ও পালংশাক আছে।
- পেঁপে পাতা পাপাইন এবং কাইমোপাপাইন এনজাইম সমৃদ্ধ, যা হজমে সহায়তা করে, ফোলাভাব এবং অন্যান্য হজমজনিত সমস্যা দূর করে। অনেক গবেষক দেখেছেন, পেঁপে পাতা ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে প্লাটিলেট কাউন্ট বাড়াতে এই পাতার ভূমিকা অনেক।
- গরুর দুধের বদলে ছাগলের দুধ খাওয়ানো ভাল।
- হলুদ সচরাচর এন্টি-সেপটিক হিসেবে কাজ করে।
- ব্যথা ও যন্ত্রণা হ্রাসে মেঁথি কাজে আসে।
- বিটরুটের স্যুপে প্রচুর ভিটামিন বি ১২ ও অন্যান্য খনিজ থাকে।
- রক্ত বাড়াতে কালো আঙুর ভালো। প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে। যেকোনো সময় ডেঙ্গু রোগীকে এই ফল খাওয়াতে পারেন।