মঙ্গলবার রাতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে দেওয়া ভাষণে এ মন্তব্য করেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, আমেরিকা বর্তমানে একটি অদৃশ্য শত্রুর (করোনাভাইরাস) বিরুদ্ধে লড়াই করছে। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার কারণে জাতিসংঘের উচিত চীনের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, নভেল করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে চীন তাদের অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যবস্থা লকডাউন করে দিলেও দেশের বাইরে যাওয়ার ফ্লাইট ঠিকই চালু রেখেছিল। এভাবে তারা বিশ্বে করোনা ছড়িয়েছে। আমি যখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিলাম, চীন তার সমালোচনা করল; অথচ, তারা নিজেদের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দিল এবং দেশের মানুষকে ঘরে আটকে রাখল।
ট্রাম্প এর আগে গত এপ্রিলে আমেরিকায় ব্যাপকভাবে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর এর জন্য চীনকে দায়ী করে এটিকে ‘চীনা ভাইরাস’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন।
এদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাঁর বক্তব্যে বলেন, কোনো দেশের সঙ্গে স্নায়ু যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছা তার দেশের নেই। আমরা সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে অন্যদের সঙ্গে মতদ্বৈধতা কমিয়ে আনা এবং পারস্পরিক দ্বন্দ্ব সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রাখব। আমরা কেবল নিজেদের উন্নয়ন চাই না কিংবা কাউকে হারিয়ে নিজেরা জেতার খেলায় জড়ানোর ইচ্ছা আমাদের নেই।’
বিশ্বের দুই ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে নানা ইস্যুতে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। করোনাকালে এবারের সাধারণ অধিবেশনে হচ্ছে ভিন্ন আঙ্গিকে। প্রায় সিংহভাগ কার্যাবলি হচ্ছে ভার্চুয়ালি। অধিবেশনে বিশ্বনেতাদের আগে থেকে রেকর্ড করা বক্তব্য শোনানো হচ্ছে।
এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ইরানের পরমাণু সমঝোতা ‘সবচেয়ে খারাপ চুক্তি’ হওয়ার কারণে তিনি এটি থেকে আমেরিকাকে বের করে নিয়েছেন এবং ইরানের বিরুদ্ধে ‘পক্ষাঘাত সৃষ্টিকারী’ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এমন সময় পরমাণু সমঝোতা সম্পর্কে এ মন্তব্য করলেন যখন সম্প্রতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের দেশগুলো অত্যন্ত জোরালো ভাষায় এই সমঝোতার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে এবং আমেরিকার ইরানবিরোধী পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।
ডোনাল্ট ট্রাম্প ইসরাইলের সঙ্গে কোনো কোনো আরব দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, শিগগিরই আরো কিছু দেশ তার ভাষায় ইসরাইলের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়ায় যোগ দেবে।