বৈশ্বিক চাল সরবরাহে ঘাটতি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা

বৈশ্বিক চাল সরবরাহে ঘাটতি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা

বিশ্বে প্রধান উৎপাদক দেশগুলো চাল বাণিজ্য ও সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় চালের দাম বেড়েছে। প্রধান খাদ্য হিসেবে চালের ওপর নির্ভরশীল অনেক দেশে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। খবর ডয়েচে ভেলে।


বিশ্বের শীর্ষ চাল রফতানিকারক ভারত। গত মাসে দেশটি বাসমতি ছাড়া অন্য চালের ওপর রফতানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যার মূল লক্ষ্য ছিল অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত ও চালের দাম স্থিতিশীল রাখা। অন্যদিকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাল রফতানিকারক থাইল্যান্ড ভূগর্ভের পানি সংরক্ষণের জন্য ধান চাষ কমাতে কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।


থাইল্যান্ডের জাতীয় পানি প্রশাসন প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ কম হচ্ছে, যা পানি ঘাটতির উচ্চঝুঁকি তৈরি করে। বিষয়টি কৃষকদের বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। যেসব ফসল কম পানিতে ও দ্রুত উৎপাদন করা যায়, সেসব ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত করা হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত ভারতীয় চালের প্রধান আমদানিকারক ও পুনঃরফতানিকারক। অন্যান্য দেশেও চাল সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। রয়টার্স নিউজ এজেন্সি ১ আগস্ট জানিয়েছে, থাই ও ভিয়েতনামের রফতানিকারকরা আগস্টে শিপমেন্টের জন্য পাঁচ লাখ টন চাল বিক্রির চুক্তিমূল্য পুনর্বিবেচনা করার তাগিদ দিয়েছেন।


ঘটনাগুলো এমন এক সময় ঘটছে যখন কৃষ্ণ সাগর বন্দরে শস্য রফতানি বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। রাশিয়া কৃষ্ণ সাগর চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছে। কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ইউক্রেনীয় শস্যের নিরাপদ রফতানি অনুমতির চুক্তি বাতিল করেছে। এমনকি ইউক্রেনের বন্দর ও শস্য স্থাপনায় সামরিক হামলাও ঘটছে। এ উদ্বেগ বৈশ্বিক খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতি আরো খারাপ করে তুলতে পারে। এমনিতেই চালের দাম এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত জুন থেকে চালের দাম ১৪ শতাংশ বেড়েছে। এশিয়াজুড়েই উষ্ণ, শুষ্ক আবহাওয়া ও অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে ধান উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোয় উত্তর ভারতে প্রবল বর্ষণ ও বন্যা ধানখেতের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। আর উৎপাদন খরচ তথা সার ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি তো রয়েছেই।


রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও শস্য চুক্তি বাতিলে গম ও ভুট্টা সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার ফলে চালের চাহিদা বেড়েছে। গত বছর ভারত ১৪০টি দেশে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ টন চাল রফতানি করেছে, যা বিশ্বব্যাপী চাল বাণিজ্যের প্রায় ৪০ শতাংশ। থাইল্যান্ড বিশ্ববাজারের চাহিদার প্রায় ১৫ ও ভিয়েতনাম ১৪ শতাংশ চাহিদা মেটায়। ভারত সরকারের তথ্য অনুসারে, দেশের চাল রফতানির মাত্র ২০ শতাংশ বাসমতি। বাংলাদেশ, নেপাল, সেনেগাল, বেনিন ও আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে বাসমতি ছাড়া অন্যান্য চালের উচ্চচাহিদা রয়েছে। ভারতীয় চালের ওপর এ নির্ভরশীলতা খাদ্যনিরাপত্তাহীনতাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তবে সেদ্ধ চাল ও বাসমতি চালের জন্য ভারতের রফতানি নীতির পরিবর্তন হয়নি, যা চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মতো দেশে পাঠানো হয়।


ভারতীয় দুটি সরকারি সূত্র ৩ আগস্ট রয়টার্সকে জানিয়েছে, আগস্টের শুরুতে ভারতের চাল মজুদ লক্ষ্যমাত্রার প্রায় তিন গুণে পৌঁছেছে, যা সম্ভাব্য সরবরাহ ঘাটতির শঙ্কা দূর করে। কর্তৃপক্ষও রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার কথা বিবেচনা করতে পারে। এদিকে চালের বৈশ্বিক মূল্য কমবে কিনা তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। কারণ দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোয় মূল্যস্ফীতি ও মূল্য নিয়ন্ত্রণের চাপ রয়েছে।


অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া