মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর কার্বোফুরান গ্রুপের নিবন্ধিত কীটনাশক ব্যবহারের আরও চার মাস ব্যবহার করার সুপারিশ করা হয়েছে। গত ১৬ জুলাই বালাইনাশকবিষয়ক জাতীয় কারিগরি কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে কার্বোফুরান গ্রুপের নিবন্ধিত কীটনাশকের বিজ্ঞাপন প্রচারসহ নবায়ন, আমদানি ও ব্যবহার জুনের পর থেকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল কৃষি মন্ত্রণালয়।
এখন আগামী অক্টোরের পর থেকে তা নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছে কারিগরি কমিটি। এ কমিটির প্রধান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপকরণ অধি শাখার যুগ্মসচিব মো. আবু জুবাইর হোসেন বাবলু বলেন, ‘কারিগরি কমিটি কার্বোফুরান গ্রুপের নিবন্ধিত কীটনাশক ব্যবহারের সময় আরও চার মাস বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
তিনি বলেন, কমিটি বলেছে আমদানি করা কার্বোফুরান কীটনাশক এখনও ব্যবসায়ীদের কাছে রয়েছে। আমরা এটা কেন অনুমোদন দেবো-সেই প্রশ্ন রয়েছে। কেন বার বার আমরা সময় বাড়াবো। আমাদের অনেক কিছু জানার বিষয় আছে- এখনও কতটুকু কীটনাশক রয়েছে। অতিরিক্ত যে কীটনাশক বলা হচ্ছে, সেটার পরিমাণ কত-এসব জানবো তারপর সিদ্ধান্ত দেবো।
এর আগে কীটনাশক নিষিদ্ধ করার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) শ্রেণি অনুযায়ী কার্বোফুরান টেকনিক্যাল এবং ফরমুলেশনের বিষাক্ততা মানুষসহ প্রাণীকূলের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় কার্বোফুরানের রেজিস্টার্ড প্রোডাক্টগুলোর নবায়ন, আমদানি ও ব্যবহার কার্যক্রম আগামী জুন পর্যন্ত চলমান থাকবে। এ সময়ের পর কোনোক্রমেই কার্বোফুরানের রেজিস্টার্ড প্রোডাক্টগুলোর বিজ্ঞাপন প্রচারসহ নবায়ন, আমদানি ও ব্যবহার করা যাবে না।
বালাইনাশক আমদানি, উৎপাদন, পুনঃউৎপাদন, বিক্রয়, বিতরণ ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং এ সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক বিষয়ে বিধান প্রণয়নে ‘বালাইনাশক আইন-২০১৮’ এর ধারা ১৫, ১৮, ১৯, ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ধারা এবং ‘বালাইনাশক বিধিমালা, ১৯৮৫’ এ দেওয়া ক্ষমতাবলে সরকার এ আদেশ জারি করেছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছিল।
কার্বোফুরান একটি দানাদার কীটনাশক। এটি প্রতিরোধক এবং প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে। অর্থাৎ পোকা লাগার আগে কার্বোফুরান ব্যবহার করলে পোকা লাগবে না এবং পোকা লাগার পর ব্যবহার করলে পোকা মারা যাবে।
কার্বোফুরানকে মানব স্বাস্থ্যের জন্য অন্তত ক্ষতিকর একটি পদার্থ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর সংস্পর্শে আসলে মানুষের বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দেয়।
কার্বোফুরানের একটি দানা একটি পাখি মেরে ফেলতে পারে। পাখিরা প্রায়ই ভুল করে বীজের বদলে এ কীটনাশক খেয়ে মারা যায়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ কীটনাশকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অর্থসংবাদ/এসএম