দেশব্যাপী প্রকৃত ভোক্তা মূল্য সূচক টানা ২৩তম মাসে বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির এ লক্ষণগুলো নিয়ে ভোক্তারা চিন্তিত। দেশটির অভ্যন্তরীণবিষয়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মতে, মূল্যস্ফীতি জুনে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ ছিল, যা বর্তমানে সামান্য পরিমাণ কমেছে। মূল্যস্ফীতি বাড়ার পেছনে উচ্চ জ্বালানি খরচের প্রভাবও রয়েছে। ১৬তম মাসের মতো জাপানের মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশের ওপরে আছে।
জ্বালানি ও তাজা খাবারের মূল্য ব্যতীত প্রকৃত ভোক্তা সূচক জুলাইয়ে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে, যা জুনে ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। মিতসুবিশি ইউএফজে রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটিংয়ের একজন সিনিয়র অর্থনীতিবিদ শিনিচিরো কোবায়াশি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি ও প্রকৃত মজুরি কমে যাওয়ায় মানুষের ব্যক্তিগত খরচের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ঝুঁকির ব্যাপার হলো উচ্চতর পণ্যের দামের কারণে গ্রাহক পরিষেবাগুলোর পেছনে খরচ কমাতে শুরু করবে।’ জাপানের অর্থনীতি এপ্রিল-জুন পর্যন্ত টানা তৃতীয় ত্রৈমাসিকে বেড়েছিল, কিন্তু ব্যক্তিগত খরচ অপ্রত্যাশিতভাবে কমেছে। খাদ্যের দাম ৯ দশমিক ২ ও টেকসই পণ্যের দাম ৬ শতাংশ বেড়েছে। পরিষেবার দাম ২ শতাংশ বেড়েছে, যা তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাভ।
আবাসন ফি গ্রীষ্মের ছুটির মৌসুমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। মোবাইল যোগাযোগের ফি ১০ দশমিক শতাংশ বেড়েছে, ২০০১ সালের পর এটি মোবাইল খাতের দ্রুততর বৃদ্ধি। জ্বালানি দাম ৮ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। পরিবারগুলোর ইউটিলিটি বিল কমাতে এবং ভোক্তা মূল্য সূচক ১ শতাংশে রাখতে সরকার এ খাতে ভতুর্কি দিচ্ছে। ব্যাংক অব জাপান (বিওজে) এরই মধ্যে ২০২৩ সালে অর্থবছরের জন্য দেশটির মূল্যস্ফীতি পরিমাণের আভাস দিয়েছে। তারা জানায়, প্রকৃত ভোক্তা সূচক ২ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে। কিন্তু পরবর্তী দুই বছরেও তা ২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারবে না ।
বিওজে জুলাইয়ে ১০ বছরের জাপানি সরকারি বন্ডের সরবরাহ কমিয়ে আনবে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার ২ শতাংশ মূল্য স্থিতিশীলতার লক্ষ্য অর্জনে টেকসই মজুরি বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে। তারা জানায়, সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতি মূলত উচ্চ চাহিদার জন্য নয়, উচ্চ আমদানি ব্যয়ের কারণে হয়েছে।
কোবায়াশি বলেন, অনেক কোম্পানি উচ্চ শ্রমের খরচ বহন করার জন্য দাম বাড়িয়েছে, বিশেষ করে যেসব খাতে শ্রমের অভাব যেমন রেস্তোরাঁ। এছাড়া এ মূল্য বাড়ার পেছনের উচ্চ কাঁচামালের দামও রয়েছে। করপোরেট উপার্জন শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে, তাই প্রশ্ন হলো তারা মজুরি বাড়ানো অব্যাহত রাখবে কিনা। যদি মজুরিতে সে প্রভাব না থাকে, তাহলে খরচ আবারো বাড়বে।
অর্থসংবাদ/এমআই