মহামারী-পরবর্তী অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে গতিশীল করতে সুদহার কমিয়েছে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সম্প্রতি বাণিজ্যিক ঋণে সুদহার ৩ দশমিক ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশে আনা হয়েছে।
ঋণের চাহিদা বাড়াতে সম্প্রতি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। মুদ্রামান রাতারাতি দুর্বল হওয়ার উদ্বেগের মধ্যে এক বছর মেয়াদি ঋণে এমন ঘোষণা দিলেও পাঁচ বছর মেয়াদি ঋণের সুদহার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। খবর রয়টার্স।
ক্রমবর্ধমান আবাসন বাজারে মন্দা পরিস্থিতি, ভোক্তা ব্যয় কমে যাওয়া ও ঋণের সুদহার বাড়ার ফলে চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম গতি হারিয়েছে। তবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিকে গতিশীল করতে কর্তৃপক্ষ নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইউয়ানের নিম্নমুখী প্রবণতার অর্থ হলো বেইজিংয়ের আর্থিক নীতি সহজীকরণে সীমিত জায়গা রয়েছে। ইউয়ানের আরো পতন হলে চীনের অন্যান্য প্রধান অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাঁচ বছর মেয়াদি এলপিআর ৪ দশমিক ২০ শতাংশে রেখে দেয়া হয়েছিল।
রয়টার্সের করা ৩৫ জন বাজার পর্যবেক্ষকের এক জরিপে অংশ নেয়া সব অংশগ্রহণকারী উভয় ধরনের ঋণের সুদহার কমানোর পূর্বাভাস দিয়েছে। জরিপে অংশ নেয়া বেশির ভাগ উত্তরদাতার মতামতে, এক বছর মেয়াদি সুদহার দশমিক ১০ পয়েন্ট কমানোর পক্ষের মত কম ছিল। বেশির ভাগই দশমিক ১৫ পয়েন্ট কমানোর পক্ষে বলেছে।
সুমিতোমো মিৎসুই ডিএস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান ম্যাক্রো স্ট্র্যাটেজিস্ট মাসায়ুকি কিচিকাওয়া বলেন, ‘সম্ভবত চীন সুদহার কমানোর পরিমাণ ও সুযোগ সীমিত করেছে। কারণ তারা ইউয়ানের নিম্নমুখী চাপ নিয়ে চিন্তিত। চীনা কর্তৃপক্ষ এখন তাদের মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।’ চীনের ভাগ নতুন ও বকেয়া ঋণই এক বছর মেয়াদি এলপিআর ঋণ। পাঁচ বছর মেয়াদি সুদ হার মর্টগেজের মূল্যকে প্রভাবিত করে। চীন অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে জুনে এক ও পাঁচ বছর উভয় ধরনের এলপিআর কমিয়েছে।
চলতি বছরে ডলারের বিপরীতে ইউয়ানের ৬ শতাংশ অবমূল্যায়ন ঘটেছে। আর এর মাধ্যমে এশীয় মুদ্রাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবমূল্যায়িত মুদ্রার একটিতে পরিণত হয়েছে ইউয়ান। পিপলস ব্যাংক অব চায়না মধ্যম মেয়াদি ঋণের সুদহার কমানোর পর এক বছর মেয়াদি ঋণে লোন প্রাইম রেট কমানো হলো। মধ্যম মেয়াদি ঋণে সুদহারই লোন প্রাইম রেটের জন্য নির্দেশক হিসেবে কাজ করে, যা ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের সম্ভাবনার ও আগে থেকে সংকেত দেয়।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তারল্য সংকট মোকাবেলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গ্রহণ করা হয়েছে নীতিমালা। পাঁচ বছর মেয়াদি ঋণ থেকে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা কিছুটা মুখ ফিরিয়ে রেখেছেন। তাদের প্রত্যাশা হলো আবাসন খাতের প্রতিবন্ধকতা ও ঘাটতির কারণে ঋণনীতিতে ফের পরিবর্তন আসতে পারে।
অর্থসংবাদ/এসএম