এতে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৭৩০ কোটি ডলার কমেছে। ফলে ১৮ আগস্ট নাগাদ দেশটির রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৯৪ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার।
তবে এর আগের সপ্তাহে দেশটির রিজার্ভ ৬০০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে ছিল। ওই সপ্তাহে ৭০৮ মিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়ে রিজার্ভ পৌঁছেছিল ৬০২ দশমিক ২০ বিলিয়ন বা ৬০ হাজার ২২০ কোটি ডলারে।
বিশ্লেষকেরা বলেছেন, সম্প্রতি ডলারের বিপরীতে ভারতের মুদ্রা রুপির মান কমেছে। ১৪ আগস্ট প্রতি ডলারের বিপরীতে সেই মান ছিল ৮৩ রুপি। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করলে রিজার্ভও কমে যায়। তবে শুধু ভারতেই নয়, এশিয়ার অন্যান্য দেশেও ডলারের বিপরীতে নিজেদের মুদ্রার দরপতন হয়েছে।
অন্যদিকে রিজার্ভ কমে যাওয়ার ঘটনায় ভারতের কাছে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ডের দাম কমে যাওয়াকেও ইঙ্গিত করে। কারণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। এতে নতুন বন্ডের দাম বাড়লেও পুরোনো বন্ডের দাম কমছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৬০০ বিলিয়ন ডলারকে ভারতের রিজার্ভের জন্য একটি মনস্তাত্ত্বিক স্তর হিসেবে মনে করে। অর্থাৎ এই স্তরের ওপরে নিজেদের রিজার্ভ সব সময় ধরে রাখতে চায় ভারত। ফলে এর নিচে রিজার্ভ নেমে যাওয়া দেশটির জন্য মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি করবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা গেছে, ভারতের রিজার্ভের বৃহত্তম অংশ বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি কমেছে। গত ১৮ আগস্ট নাগাদ এটির পরিমাণ ৬ দশমিক ৬০ বিলীয়ন ডলার কমেছে। অন্যদিকে, সোনার রিজার্ভও কমেছে। এ ছাড়া স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস বা এসডিআরের পরিমাণ কমেছে ১১ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
ভারতে ২০২১ সালের অক্টোবরে সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল। সে সময় সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই বৃদ্ধির কারণে রিজার্ভ পৌঁছায় ৬৪৫ বিলিয়ন বা ৬৪ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারে। তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বৈশ্বিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এতে ভারতের চলতি হিসাব চাপের মুখে পড়ার পর রিজার্ভও কমতে শুরু করে।
অর্থসংবাদ/এমআই