আন্তর্জাতিক ও নিকারাগুয়ার স্থানীয় বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বহুদিন ধরে ওর্তেগা প্রশাসনের বিরুদ্ধে দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সংবাদমাধ্যম, ব্যবসায়ী নেতা এবং ক্যাথলিক চার্চের যাজকদের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগ জানিয়ে আসছে। সেসব অভিযোগ আমলে নিয়েই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে শুক্রবারের ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন ব্লিনকেন।
এর আগে নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগা, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ওর্তেগার স্ত্রী রোসারিও মুরিলো, তাদের তিন সন্তান এবং সরকারি প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের বেশ কয়েক জন কর্মকর্তার ওপর ভিসা বিধিনিষেধ জারি করেছিল মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এবার যে ১০০ কর্মকর্তাকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হলো- তাদের অধিকাংশই ওর্তেগা প্রশাসনের মাঝারি পর্যায়ের কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, বৈপ্লবিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৭৯ সালে স্বৈরশাসক অ্যানাসতাসিয়া সোমোজা দিবায়েলের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটিয়ে নিকারাগুয়ার ক্ষমতা দখল করে বামপন্থী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী সান্দিনিস্তা গেরিলা মুভমেন্ট। ওই অভ্যুত্থানে সান্দিনিস্তা গেরিলা মুভমেন্টের নেতৃত্বে ছিলেন ড্যানিয়েল ওর্তেগা। অভ্যুত্থানের সরাসরি ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন তিনি।
তারপর গত ৪৪ বছরের বিভিন্ন সময় ক্ষমতার কেন্দ্রে ও বাইরে অবস্থান করেছেন তিনি। সর্বশেষ ২০০৭ সালে তিনি ক্ষমতায় আসেন এবং এখনও নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্টের পদে আছেন ওর্তেগা।
ক্ষমতা ধরে রাখতে গত ৪৪ বছরের বিভিন্ন সময়ে বিরোধী রাজনৈতিক দল, সংবাদমাধ্যম, সিভিল সোসাইটি ও মানবাধিকার কর্মীদের ওপর গুরুতর ও পদ্ধতিগত সহিংসতা চালানো সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি অভিযোগে অভিযুক্ত ড্যানিয়েল ওর্তেগা; আর এক্ষেত্রে ওর্তেগার স্ত্রী ও নিকারাগুয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট রোসারিও মুরিলো এবং তাদের দল সান্দিনিস্তা গেরিলা মুভমেন্টের জেষ্ঠ্য নেতারা তাকে সবসময় সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন এবং করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক অঙ্গ সংগঠন ইউনাইটেড নেশন্স হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের (ইউএনএইচআরও) একটি প্রতিনিধিদল গত মার্চে জানিয়েছে, ওর্তেগার বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন ও সহিংসতা সংক্রান্ত অভিযোগগুলোর সত্যতা পেয়েছে তারা।
অর্থসংবাদ/এমআই