বিশ্বাস বিল্ডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের মালিকানায় যুক্ত করতে চায় শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফাইন ফুডস লিমিটেড। এজন্য ভেন্ডর এগ্রিমেন্ট বা বিক্রেতা চুক্তির মাধ্যমে বিশ্বাস বিল্ডার্সের নামে ফাইন ফুডের শেয়ার ইস্যু করতে চায় খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের কোম্পানিটি। সম্প্রতি শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি দিয়েছে ফাইন ফুডস। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, ফাইন ফুডসের উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে কোম্পানিটির ৯ দশমিক ০৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে প্রতিষ্ঠানের ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে। এজন্য ফাইন ফুডস বিশ্বাস বিল্ডার্সের অনুকূলে শেয়ার ইস্যু করে এ আইন পরিপালন করতে চায়।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো চিঠিতে ফাইন ফুডস্ জানায়, কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি থানার মানিকখালীতে অবস্থিত প্রকল্প-১ সংলগ্ন বিশ্বাস বিল্ডার্স লিমিটেড নামে একটি সুপ্রতিষ্ঠিত কোম্পানির প্রায় ২৫ একর জমি রয়েছে, যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৪০ কোটি টাকার মতো। উক্ত জমির সমুদয় কিংবা অংশবিশেষের বিনিময়ে বিশ্বাস বিল্ডার্স লিমিটেডের অনুকুলে ভেন্ডরস এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে ফাইন ফুডস্ লিমিটেডের শেয়ার ইস্যু করে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে ফাইন ফুডসের পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবনা আপনাদের আন্তরিক বিবেচনা ও সদয় অনুমতির জন্য প্রেরণ করছি।
ফাইন ফুডস বলছে, জমির বিনিময়ে বিশ্বাস বিল্ডার্সকে মালিকানায় যুক্ত করলে ব্যবসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে কোম্পানীর মুনাফা বৃদ্ধি পাবে। ফলে বিনিয়োগকারীদেরকে লভ্যাংশ প্রদানের সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। একইসঙ্গে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন নূন্যতম ৩০ কোটি টাকা থাকার বিধান পরিপালন করাও নিশ্চিত হবে।
বিশ্বাস বিল্ডার্সকে মালিকানায় যুক্ত করার পাশাপাশি দুজনকে কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক পদে নিয়োগ দিতে বিএসইসির কাছে আবেদন করেছে ফাইন ফুডস। সাবেক অতিরিক্ত সচিব খান মোহাম্মদ বেলাল এবং মোহাম্মদ নাছেরকে কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক পদে নিয়োগ দিতে চায় কোম্পানিটি।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ফাইন ফুডস লিমিটেড। কোম্পানিটির প্রধান ব্যবসা হচ্ছে মাছ ও মাছের পোনা উৎপাদন। সর্বশেষ হিসাববছরে (২০২২ সাল) শেয়ারহোল্ডারদের দেড় শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানিটির ৭২ দশমিক ০৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা প্রতিষ্ঠানটির ১৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছে। খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের কোম্পানিটিতে কোন বিদেশি বিনিয়োগ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ অর্থসংবাদকে বলেন, জমির বিনিময়ে এভাবে কারও নামে শেয়ার ইস্যু করা যায় না। এসব তো বিএসইসির দেখা উচিৎ।
জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম অর্থসংবাদকে বলেন, ভেন্ডরস্ এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে দুই কোম্পানি একত্রিত (মার্জ) করা যায় না। এজন্য মহামান্য হাইকোর্টের অনুমতি নিতে হয়। আর শেয়ার ইস্যুর কোন বিষয় থাকলে তখন সেটি কমিশন দেখে। তবে তালিকাভুক্ত এবং অ-তালিকাভুক্ত সব কোম্পানিকেই আগে উচ্চ আদালতের অনুমতি নিতে হয়।