বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত ৩ মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় খেলাপি ঋণ ২ হাজার ৯৬ কোটি টাকা বা প্রায় ৩ শতাংশ বেড়েছে। এই খাতে জুনের শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১৯ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা, যা এই খাতে বিতরণ করা মোট ঋণের ২৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। মার্চের শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় খেলাপির পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা, যা ছিল ওই সময়ের মোট ঋণের ২৫ শতাংশ।
খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আর্থিক খাতের বহুল আলোচিত ব্যক্তি প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যে অনিয়ম করেছেন, পুরো খাতই এখন তার জের টানছে। পি কে হালদারের মালিকানা আছে বা ছিল, এমন কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও খেলাপি ঋণ বাড়ছে, যে কারণে সার্বিকভাবে এ খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে।
যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণ ৮০ শতাংশের বেশি, সেগুলো হলো পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, ফার্স্ট ফাইন্যান্স লিমিটেড ও ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। এর মধ্যে প্রথম চারটি প্রতিষ্ঠানে মালিকানা আছে পি কে হালদারের। আবার এসব প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ টাকা তিনি নামে-বেনামে তুলে নিয়েছেন, যা এখন খেলাপি হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুনের শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের স্থিতি, অর্থাৎ বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৭২ হাজার ১৫০ কোটি টাকায়, যা গত মার্চে ছিল ৭১ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ৩ মাসে ঋণ বেড়েছে ৮৮৫ কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৮২১ কোটি টাকা, যা গত জুনে বেড়ে হয় ১৯ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ৬ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছিল ৩ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।
অর্থসংবাদ/এমআই