সূত্র অনুযায়ী, অক্টোবরে দেশটির এ হার ১ দশমিক ২ শতাংশে নেমে এসেছে, সেপ্টেম্বরে যা ছিল ১ দশমিক ৯ শতাংশ। তারও আগের মাস অর্থাৎ আগস্টে মূল্যস্ফীতি ৪ দশমিক ৬ শতাংশ ছিল। আর গত বছরের সেপ্টেম্বরে এ হার গিয়ে চড়েছিল রেকর্ড ৬৯ দশমিক ৮ শতাংশে। অর্থাৎ এক বছরের মাথায় মূল্যস্ফীতি ৬৮ শতাংশের বেশি কমিয়ে এনেছে দ্বীপদেশটি।
মূল্যস্ফীতির বাড়বাড়ন্তের কারণে গত বছর শ্রীলংকার অর্থনীতির অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম আকাশ ছুঁয়ে যায়। চরমে পৌঁছায় জ্বালানি সংকট। পেট্রল পাম্পগুলোয় অপেক্ষমাণ যানবাহনের সারি কেবল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। জন-অসন্তোষ চরমে ওঠে। দ্বিগুণ-তিন গুণ মূল্যেও মিলছিল না খাদ্য ও জ্বালানি। রিজার্ভ সংকটে দেউলিয়া শ্রীলংকার জন্য গত বছর আরো বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছিল মূল্যস্ফীতি। এ অবস্থা থেকেও দেশটি ফিরে এসেছে বিস্ময়করভাবে। দুর্দশাগ্রস্ত শ্রীলংকার এ ঘুরে দাঁড়ানো রূপকথার গল্পের মতো শোনালেও অর্থনীতির প্রচলিত নীতির কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমেই অর্থনৈতিক সংকট সামাল দিয়েছে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
শ্রীলংকার শুমারি ও পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্য বলছে, এ বছরের জানুয়ারিতে দেশটির মূল মূল্যস্ফীতি ছিল ৪৫ দশমিক ৬ শতাংশ। এর পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে এটি কমে ৪৩ দশমিক ৫৬ শতাংশে দাঁড়ায়। গত মার্চে মূল্যস্ফীতি ছিল ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ। এপ্রিলে এটি আরো কমে দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৮ শতাংশে। এর পরের মে মাসে দেশটির মূল্যস্ফীতি ছিল ২০ দশমিক ৩ শতাংশ। গত জুনে মূল্যস্ফীতি এক অংকে নেমে আসে, যা ছিল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। এ বছরের জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। আগস্টে এটি আরো কমে ৪ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়ায়। গত সেপ্টেম্বরে দেশটির মূল্যস্ফীতি ছিল ১ দশমিক ৯ শতাংশ। সর্বশেষ এ বছরের অক্টোবরে শ্রীলংকার মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ২ শতাংশে। এ সময়ে দেশটির খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ, যা গত চার মাস ধরেই অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি অক্টোবরে ৪ দশমিক ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের মাসে ছিল ৪ দশমিক ৭ শতাংশে।
শ্রীলংকার মূল্যস্ফীতি কমে আসার বিষয়ে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, যথাযথ নীতি পদক্ষেপ নেয়ার কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং মধ্যম মেয়াদে তা লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে ৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে। তবে সরকারের মূল্য বেঁধে দেয়া, ট্যারিফ কিংবা কর বাড়ানোর কারণে সাময়িকভাবে স্বল্পমেয়াদে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে।
অর্থসংবাদ/এমআই