২০২১ সালে করোনাকালীন লকডাউন তুলে নেওয়ার পর প্রত্যাশার চেয়ে শক্তিশালী হয় ধনী দেশগুলোর শ্রমবাজার। এই ধারা অব্যাহত থাকে ২০২২ ও ২০২৩ সালেও। তবে ২০২৪ সালের অর্থনৈতিক পূর্বাভাস নিয়ে কিছু উদ্বেগ রয়েছে। বলা হচ্ছে, বিশ্ব যদি মন্দার কবলে পড়ে তারপরও শক্তিশালী থাকবে ধনী দেশের শ্রমবাজার।
ধনী বিশ্বে বেকারত্বের হার ৫ শতাংশেরও কম, যা অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় কম। ধনী দেশগুলোর মধ্যে ইতালি ও পর্তুগালের মতো দেশে বেকারত্বের হার সবসময়ই বেশি থাকে। তবে এ দেশেও এখন বেকারত্বের হার সর্বনিম্ন পর্যায়ে।
শ্রমবাজারের এমন শক্তিশালী সূচকে অবাক অনেক অর্থনীতিবিদ। কোম্পানিগুলোতে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় যেখানে লাখ লাখ চাকরি নাই হয়ে যাওয়ার কথা সেখানে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। জাপানের উৎপাদনখাতের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, একটি রোবটের বিপরীতে কাজ করছে এক হাজার কর্মী। সেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশ।
চাকরির বাজার শক্তিশালী হওয়ার ক্ষেত্রে তিনটি কাঠামোগত বিষয় কাজ করে। প্রথমটি নির্ভর করে ডেমোগ্রাফিকের (জনসংখ্যা) ওপর। দ্বিতীয় বিষয়টি হলো নীতি। তৃতীয়টি হলো প্রযুক্তিগত উন্নতি।
এসব বিষয়ের কারণেই ২০২২ ও ২০২৩ সালে অসংখ্য নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়। হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ ও বিনোদনের ক্ষেত্রে বেশি সমৃদ্ধি হয়। এসময় ধনী বিশ্বের শ্রমচাহিদা সরবরাহ ছাড়িয়ে যায়। মজুরি বেড়ে যায় ৫ শতাংশের বেশি।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শ্রমের চাহিদা কমেছে, কিন্তু এটি কর্মসংস্থান কমের জন্য নয় বরং শূন্যপদ কমার কারণে হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় শূন্যপদ প্রকৃতপক্ষে তাদের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশের বেশি থেকে কমে গেছে। তবুও দেশটিতে কর্মসংস্থানের হার নতুন রেকর্ড মাত্রায় বেড়ে চলেছে। ধনী দেশগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এখনো মহামারি আগের তুলনায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশের বেশি অপূর্ণ পদ রয়েছে।
চাকরির বাজার শক্তিশালী থাকার আরেকটি কারণ হলো শ্রম মজুত তত্ত্ব। করোনা মহামরির সময় কোম্পানিগুলো কর্মীদের ছেড়ে দেয়। কিন্তু পরে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই সামনে মন্দার আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও কর্মী ধরে রাখতে চায় তারা। কারণ একই ভুল ফের করতে নারাজ কোম্পানিগুলো।