স্পট মার্কেটে গতকাল মূল্যবান এ ধাতুর দাম দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। আউন্সপ্রতি লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৭ ডলার ৬৯ সেন্টে। এর আগের দিন বুধবার একই মার্কেটে স্বর্ণের দাম ২ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম ২ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি আউন্স বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৫২ ডলার ৫০ সেন্টে।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউবিএসের বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে আগামী বছর সুদহার আরো কমানো হতে পারে—ফেডের এমন ইঙ্গিতে বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণের বাজারে ঝুঁকছেন। আমরা মনে করি, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ২ হাজার ২৫০ ডলার ছোঁবে।’
টানা তৃতীয় বৈঠকে ফেড সুদহার অপরিবর্তিত রাখার পর বাজার বিশ্লেষকরা প্রত্যাশা করছেন নতুন বছরে সুদহার কমিয়ে আনা হবে। সুদ হার নিয়ে ফেডের ১৯ জন কর্মকর্তা পূর্বাভাস দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৭ জনই সুদহার কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বাজার বিশ্লেষক সংস্থা সিএমই ফেডওয়াচ টুল জানিয়েছে, বিনিয়োগকারীরা ২০২৪ সালের মার্চে সুদহার কমানোর সম্ভাবনা দেখছেন ৮৯ শতাংশ।
বাজার প্রবণতা অনুযায়ী, নিম্ন সুদহার বন্ড ও ডলারের চাহিদা কমিয়ে দেয়। ডলারের বিনিময় মূল্য কমে গেলে ভিন্ন মুদ্রার গ্রাহকদের মাঝে স্বর্ণ ক্রয়ের হার বেড়ে যায়। আবার সুদহার কমে গেলে মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে বিনিয়োগকারীরা ডলারে বা বন্ডে বিনিয়োগের পরিবর্তে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এসব কারণে ফেড সুদহার কমালে স্বর্ণের চাহিদা বেড়ে দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে।
ডলারের বিনিময় মূল্য গতকাল চার মাসের সর্বনিম্নে নেমেছে। এ কারণে ভিন্ন মুদ্রার গ্রাহকদের কাছে স্বর্ণের ক্রয়মূল্য কমেছে। একই সময়ে ১০ বছর মেয়াদি মার্কিন বন্ডের সুদহার গত জুলাইয়ের শেষ দিকের পরে চার মাসের মধ্যে নিম্ন পর্যায়ে ঠেকেছে।
বিশ্লেষক রস নরম্যান বলেছেন, ‘স্বর্ণের বাজার এখন ইতিবাচক। নতুন বছরে দাম আবারো রেকর্ড উচ্চতায় উঠতে পারে। কারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বর্ণ ক্রয় বাড়ানোর মনোভাব দেখা যাচ্ছে।’
বিনিয়োগকারীরা এখন সুদহার নিয়ে অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন। বিশেষ করে ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন।
এদিকে স্পট মার্কেটে গতকাল অন্যান্য ধাতুর দরও ছিল ঊর্ধ্বমুখী। রূপার দাম ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। আউন্সপ্রতি দাম দাঁড়িয়েছে ২৪ ডলার শূন্য ৮ সেন্ট। প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে উঠেছে ৯৪২ ডলার ২০ সেন্টে। আর প্যালাডিয়ামের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশ। আউন্সপ্রতি ধাতুটির মূল্য ঠেকেছে ১ হাজার ১৩ ডলার ৯৩ সেন্টে।